সরকারকে জি এম কাদের

মেগা প্রজেক্টের ব্যয় স্থগিত রেখে হলেও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ রাখুন

গ্যাসের চুলা
প্রতীকী ছবি

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, এ সময় জ্বালানি গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হবে জনবিরোধী সিদ্ধান্ত। সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিলে প্রমাণ হবে, দেশের মানুষের প্রতি সরকারের কোনো দরদ নেই।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। তিনি মেগা প্রজেক্টের বিপুল ব্যয় স্থগিত রেখে হলেও এ মুহূর্তে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বিবৃতিতে বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের গ্যাস উৎপাদন কোম্পানিগুলো বর্তমান মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বাড়িয়ে গ্যাসের মূল্য পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে। বর্তমানে পাইপলাইনে সরবরাহকৃত গ্যাসে দুই চুলার জন্য গ্রাহককে প্রতি মাসে ৯৭৫ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাতে দুই চুলার মাসিক বিল বেড়ে দাঁড়াবে ২ হাজার ১০০ টাকা। একই সঙ্গে আবাসিক গ্রাহকদের ঘনমিটারপ্রতি ৯ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা ৩৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শিল্পকারখানায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আবার সার ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে হোটেল–রেস্তোরাঁয় ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিএনজিতে ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহাবিপর্যয় ডেকে আনবে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মূল্যবৃদ্ধির এ অর্থ দেশের প্রতিটা মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হবে, যা মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, এমনিতেই গ্যাসের বিল পরিশোধ করার পরও রান্নার জন্য লাইনে গ্যাস পায় না সাধারণ মানুষ। সে জন্য নিয়মিত গ্যাসের বিল দেওয়ার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক চুলা ব্যবহার করছে অনেকে। আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত খরচ করে কাঠের চুলাও ব্যবহার করছে রান্নার জন্য। অপর দিকে মহামারি করোনাকালে কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে। ইতিপূর্বে তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য দিন দিন আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। পরিবার–পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এমন অবস্থায় গ্যাসের দাম দ্বিগুণ হলে জীবন বাঁচাতে মানুষের মধ্যে হাহাকার উঠবে।

বিবৃতিতে জি এম কাদের আরও বলেন, গ্যাসের দাম বাড়লে রপ্তানিপণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে যথেষ্ট পরিমাণ। তাতে হুমকির মুখে পড়তে পারে দেশের পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্প। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বায়িং প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ ফেরাতে পারে বাংলাদেশ থেকে, যা মহা বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। তাই এ সময় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হবে হঠকারী ও দুঃখজনক। মেগা প্রজেক্টের বিপুল ব্যয় স্থগিত রেখে হলেও এ মুহূর্তে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ রাখতে হবে।