মহাসচিব পদে দুই নেতাকে নিয়ে আলোচনা বেশি

জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে মুজিবুল হক আর তরুণদের মধ্যে রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার নাম আলোচনায়।

মুজিবুল হক ও রেজাউল ইসলাম

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব পদ নিয়ে জ্যেষ্ঠ নেতাদের নানামুখী তৎপরতা চলছে। মহাসচিব পদের আলোচনায় নতুন করে আরও যুক্ত হয়েছেন দলের কো–চেয়ারম্যান মুজিবুল হক ও সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম মসীহ। আর তরুণ নেতাদের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার নামও আলোচনায় আছে। তবে মুজিবুল হক ও রেজাউল ইসলামকে নিয়ে এখন আলোচনা বেশি হচ্ছে।

জাপার একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে এ মুহূর্তে দলের কো–চেয়ারম্যান মুজিবুল হক মহাসচিব পদের জন্য খুবই তৎপর। তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে জাপার দলীয় সাংসদ। তাঁর পাশাপাশি দলের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সৌদি আরবে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহও সক্রিয় হয়েছেন। তবে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার পর তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হননি। এ মুহূর্তে দলে তাঁর কোনো পদও নেই।

মহাসচিব পদে ওই দুই নেতার একজনের জন্য রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায় থেকেও চেষ্টা-তদবির হচ্ছে বলে জাপায় গুঞ্জন আছে। অন্যজনের প্রতি সংসদের বিরোধী দলের নেতা ও জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সমর্থন রয়েছে। যদিও মহাসচিব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে জাপার শীর্ষ নেতৃত্বকে নানা কিছু বিবেচনায় নিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।

এ বিষয়ে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পার্টির চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু আমাদের তো দায়বদ্ধতা আছে অনেক জায়গায়।’

জাপার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব দলের সাংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে মহাসচিব করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এর বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠ নেতাদের দু-একজন ছাড়া সবাই একজোট হয়ে যাওয়ায় এ চিন্তা বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে কো–চেয়ারম্যান মুজিবুল হক আর তরুণদের মধ্যে দলের প্রসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার নাম আলোচনায় আছে। এর মধ্যে মুজিবুল হক গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে তাঁর বনানীর কার্যালয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ করেছেন।

মুজিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের গঠনতন্ত্রে চেয়ারম্যানের ক্ষমতা আছে যে কাউকে নিয়োগ দেওয়ার। দলের স্বার্থে তিনি যাঁকে নিয়োগ দেবেন, আমরা তাঁকে মেনে নেব। তবে আমি চেয়ারম্যানকে বলেছি, এমন একজনকে দায়িত্ব দেন, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।’

২ অক্টোবর জাপার মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু মারা যান। তাঁর মৃত্যুর দুই দিন পার না হতেই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে মহাসচিব হতে তৎপরতা চালান। তাঁদের মধ্যে দলের সাবেক দুই মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার ও মসিউর রহমান, ঢাকার সাংসদ সৈয়দ আবু হোসেন, অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান ও শামীম হায়দার পাটোয়ারী উল্লেখযোগ্য। কিন্তু কেউ সরাসরি নিজের আগ্রহের কথা না বলে নানাভাবে চেষ্টা-তৎপরতা চালাচ্ছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাপার প্রয়াত মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর শোকসভা আছে। তাঁর শোকসভার পর যেকোনো দিন নতুন মহাসচিব নিয়োগ করা হবে। যেহেতু একমাত্র জ্যেষ্ঠ কো–চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ছাড়া বাকি সব কো–চেয়ারম্যানই মহাসচিব পদপ্রার্থী, সে কারণে দলের কোনো পর্যায়ে মহাসচিব নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হবে না। দলের চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠ কো–চেয়ারম্যান মিলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।