নারী সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে টেলিভিশনের টক শোতে ‘চরিত্রহীন’ বলায় মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার, গণমাধ্যমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করাসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ শনিবারও কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নারী সাংবাদিকেরা মইনুল হোসেনের সব সংবাদ সাত দিন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ গৌরব ’৭১ সংগঠনের ব্যানারে রাজধানীর শাহবাগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ফরিদপুর যুব সমিতি-ঢাকা নামে একটি সংগঠনের কর্মীরাও ছিলেন। তাঁরা এ মানববন্ধনের প্রতি তাঁদের সমর্থন জানান। কর্মীদের মাথায় সাদা, সবুজ ও হলুদ রঙের ক্যাপে লেখা ছিল, মইনুলের বিচার চাই।
মানববন্ধনে গৌরব ’৭১-এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম রাজনীতির মাঠ থেকে মইনুল হোসেনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পাশাপাশি গণমাধ্যমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার আহ্বান জানান।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহীন সংগঠনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা না হলে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করা হবে এবং যুবসমাজ পথে নামতে বাধ্য হবে। মইনুল হোসেনকে ‘জামায়াত এজেন্ট’, ’৭৫-এর দালাল এবং এক-এগারোর কুশীলব হিসেবে আখ্যায়িত করেন আলোচকেরা।
মানববন্ধন শেষে মইনুল হোসেনের কুশপুত্তলিকায় একেকজন লাথি ও থুতু দিয়ে ঘৃণা প্রকাশ করতে থাকেন এবং পরে কুশপুত্তলিকায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মানববন্ধন শেষে শাহবাগ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য হয়ে আবার শাহবাগে এসে শেষ হয়।
নারী সাংবাদিকদের পক্ষে নাসিমুন আরা হকের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মইনুল হোসেনের বক্তব্য শুধু নারীর জন্য নয়, সব নাগরিকের জন্য অবমাননাকর, আপত্তিকর ও চরম অসহনশীলতার পরিচায়ক। তাঁর মতো যাঁরা রাজনৈতিক সহনশীলতার কথা বলেন, তাঁদের কাছ থেকে এ ধরনের শব্দ চয়ন উদ্বেগজনক এবং ভবিষ্যতে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের জন্য বিপজ্জনকও বটে। সুতরাং, তাঁকে প্রকাশ্য ক্ষমা চাইতে হবে। কিন্তু এখনো মইনুলের কাছ থেকে সে রকম কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী সাংবাদিকদের প্রতি চরম অবমাননাকর প্রচারণা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে মাসুদা ভাট্টিকে লক্ষ্য করে চালানো অপপ্রচার সব সীমা অতিক্রম করছে, তাঁর নিরাপত্তা-সংকটও তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, এই অবস্থায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন এই আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ায় এবং এখনো জনসম্মুখে ক্ষমা না চাওয়ায় তাঁকে সব ধরনের সংবাদ, অনুষ্ঠান এবং টক শো থেকে বয়কট করার জোর আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সম্মান রক্ষার্থেই এই দাবি সংগত বলেও আমরা মনে করি।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে একাত্তর টেলিভিশনের নিয়মিত আয়োজন একাত্তর জার্নালে রাজনৈতিক সংবাদের বিশ্লেষণ চলছিল। এ সময় মইনুলের কাছে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন ছিল, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে যে, সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব আপনি করছেন কি না?’ এর জবাবে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি “চরিত্রহীন” বলে আমি মনে করতে চাই।’