ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলতে চান না মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তিনি চলমান ভাস্কর্য বিতর্ক নিয়ে কিছু বলতে চান না। কারণ, এটি তাঁর কাছে কোনো ইস্যু না। আজ মঙ্গলবার সকালে তিনি ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুলের ভাষায়, ‘ভাস্কর্য নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। এটা আমার কাছে কোনো ইস্যু না। আমাদের কাছে এখন ইস্যু হচ্ছে গণতন্ত্র, আমার অধিকার। আমার সাংবিধানিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করা। আমরা এখন ভোট দিতে পারি না। কথা বলতে পারি না। লিখতে পারি না।’

দেশে জঙ্গিবাদ নেই, দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কথা নেই বার্তা নেই, গ্রামের মধ্যে জঙ্গি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে তাদের বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এগুলো সব সাজানো। বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি আছে বলে আমি মনে করি না। তবে মৌলবাদ আছে।’ তাঁর অভিযোগ, আওয়ামী লীগ মৌলবাদকে প্রশ্রয় ও উসকে দিচ্ছে। তিনি দাবি করেন, ‘বিএনপির সঙ্গে মৌলবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগ সব সময় উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চায়। বাংলাদেশে যত অপকর্ম হয়েছে, সেগুলো আওয়ামী লীগ করেছে। গণতন্ত্রের যা কিছু অর্জন, সবই তারা শেষ করে দিয়েছে।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন

বিএনপি মৌলবাদীদের ইন্ধন দিচ্ছে, আওয়ামী লীগের নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মৌলবাদীদের উত্থানের পেছনে যদি কারও হাত থাকে, তবে সেটা আওয়ামী লীগেরই আছে। বর্তমান সরকার মৌলবাদকে উসকে দিচ্ছে, যাতে তারা রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে পারে। তারা সব সময় বিএনপির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বিএনপিকে নিঃশেষ করার ছুতো খুঁজে বের করে। এটা একটি নোংরা রাজনীতি। এতে দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে।’

সম্প্রতি দেশের ছয়টি চিনিকল বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন করোনা পরিস্থিতি চলছে। শ্রমজীবীর এক অংশ বেকার হয়ে পড়ছে। সে সময় চিনিকলশ্রমিকদের বেকার করে ফেলা ও আখ চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত চাষিদের অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া সামগ্রিকভাবে উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলবে। এটি অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক নয়। সরকার কোনো কথা ছাড়াই কয়েকটি চিনিকল বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিক ও কৃষকদের একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এটা একটা অন্যায় কাজ হচ্ছে বলে মনে করি।’

বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশে বিদেশি বিনিয়োগ এখন নেই বললেই চলে। এর পেছনের কারণ হলো দেশের পরিবেশটা কখনোই বিনিয়োগবান্ধব নয়। যাঁরা বাইরের দেশ থেকে এখানে ব্যবসা করতে আসেন, তাঁদের গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ পাওয়া, ঘুষ দেওয়া, সরকারি দলের লোকজনকে চাঁদা দেওয়া—সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। একই সঙ্গে দেশে যেহেতু গণতান্ত্রিক সরকার নেই, অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে; এখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ মনে করে না।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আমীন, সহসভাপতি আল মামুন আলম, নুর ই শাহাদাত, অর্থবিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবুনুর প্রমুখ।