সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় এবং যাত্রী ভোগান্তি থেকে বিরত থাকার জন্য পরিবহন মালিক–শ্রমিক নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, অন্যথায় দায়ী পরিবহনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল সোমবার বিভিন্ন পরিবহনে অধিক হারে ভাড়া আদায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে তাঁর দপ্তরে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে আজ থেকে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। দেশব্যাপী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, হাইওয়ে পুলিশ,জেলা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আবারও মালিক ও শ্রমিক নেতাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভাড়া আদায়ের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অন্যথায় সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু গণমাধ্যম দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলেও দু-একটি গণমাধ্যম বিরূপ ও অপমানজনক সমালোচনা করছে, যা প্রত্যাশিত নয়। অন্যদিকে কেউ কেউ পাতানো খেলা বলছে, অনেকেই আঁতাতের গন্ধও খুঁজে পেয়েছেন উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামে একটি ভুয়া সংগঠনও বিষয়টি না জেনে, না বুঝে সমালোচনা করছে।
ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন তাহলে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে সেটা কি জনগণের জন্য কল্যাণকর হতো? মন্ত্রী মনে করেন, ‘যাত্রী ভোগান্তি কমাতে অতীতের ধারাবাহিকতায় গণমাধ্যমের মূল্যবান পরামর্শ আমাদের কাছে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপির আমলে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা, সেটা বিএনপি ভুলে গেলেও জনগণ ভুলেনি। বিএনপির ৫ বছরে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছিল আটবার। তারা মূল্য কমাতে পারেনি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকলেও দেশে তারা দাম বাড়িয়েছিল।
আওয়ামী লীগ গত ১৩ বছরে ৫ বার মূল্যবৃদ্ধি করলেও ৫ বার মূল্যহ্রাসও করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের ৭ দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাস করেছিলেন।
বিএনপি নেতাদের বক্তব্য শুনলে মনে হয় দেশ যেন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, কিংবা দুর্ভিক্ষ চলছে এবং জনগণের পিঠ নাকি দেয়ালে ঠেকে গেছে। এই বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে এসব নেতিবাচক বক্তব্য একটি দায়িত্বহীন রাজনৈতিক দলের হতাশার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি বলেন, জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকেনি, দেশের জনগণ এগিয়ে চলছে সম্মুখপানে। আসলে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বিএনপির।
এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বাংলাদেশের নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং এবং বিদায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশের নেতৃত্বে এডিবির একটি প্রতিনিধিদল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অফিসকক্ষে মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। এ সময় এডিবির সহায়তায় যেসব প্রকল্পের কাজ চলমান আছে, সেগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।