বিএনপিকে অলি

বেইমানি করবেন না, সংসদে যাবেন না

অলি আহমদ
অলি আহমদ

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ও ২০ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক অলি আহমদ বলেছেন, এই সরকার যে নির্বাচন করেছে, সেটাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা আশা করব, বিএনপির যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা জাতির সঙ্গে প্রতারণা-বেইমানি করবেন না, সংসদে যাবেন না।

আজ শনিবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে লেবার পার্টির উদ্যোগে বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় অলি আহমদ এ আহ্বান জানান।

অলি আহমদ বলেন, সংসদে যদি যান, আমরা মনে করব তারা (বিএনপি) জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমরা যারা নির্বাচন করেছি, তারা জেলে গেছে, যারা মেহনত করেছে, তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তিনি বলেন, এটা জঘন্যতম নির্বাচন। হাজার বছর এটা ইতিহাসে লেখা থাকবে। এই কলঙ্ক থেকে আওয়ামী লীগ কখনো মুক্ত হতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে অলি আহমদ বলেন, আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। যেটা ভুল হয়েছে, সেটা শুধরানোর ব্যবস্থা নিন, প্রয়োজনে পুনর্নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন। না হলে দেশ অরাজকতার দিকে ধাবিত হবে, রক্তপাত বন্ধ করা সম্ভব হবে না। তিনি আরও বলেন, একদিকে আপনারা ঐক্যের কথা বলবেন, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত বিএনপিকে গালি দেন, বিএনপি ভেঙে যাচ্ছে, বিএনপি ছিঁড়ে যাচ্ছে। জাতীয় ঐক্য যদি চান, তাহলে সব দলের নেতাদের সঙ্গে বসে কীভাবে জাতীয় ঐক্য হবে, এই আলোচনা করতে অসুবিধা কোথায়? আমরা কি দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছি, আমরা কি জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করছি?

মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গে অলি আহমদ বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধা। এ দেশের জন্য জীবন দিতে গিয়েছিলাম। আপনাদের (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) দলে কজন আছেন এ রকম জীবন দিতে গিয়েছিলেন?

দুর্নীতির বিষয়ে সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে অলি আহমদ বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানও লোক দেখানো। এবার যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, যাদের সম্পদ কয়েক শ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তাদের নোটিশ দেওয়া উচিত, এই সম্পদ কীভাবে বাড়ল? শুধু কথায় দুর্নীতি দমন বলবেন, জিরো টলারেন্স বলবেন, আর কর্মকাণ্ডে সেটা হবে না, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে বিএনপি নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে এবং বিজয়ী প্রার্থীরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়নি। যদিও গতকাল শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে সংসদে যাওয়ার আহ্বান জানান।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে অলি আহমদ বলেন, ঘরে বসে বক্তব্য রেখে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। আমি জানি না, বিএনপি কী করবে? তবে আমরা ছোট দল, আমরা তাদের (বিএনপি) সঙ্গে থেকে সাহায্য-সহযোগিতার পরামর্শ দিতে পারব। কিন্তু শক্তি জোগান দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না।

এ সময় সরকারের উদ্দেশে অলি আহমদ বলেন, খালেদা জিয়া তিন বারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সেটা বিবেচনায় নিয়ে, তাঁর বয়স বিবেচনায় নিয়ে আমরা আশা করব সরকার অনতিবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেবে।

আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, ২০ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার প্রমুখ বক্তব্য দেন।