বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সুপারিশ গণবিরোধী: সিপিবি

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)

বিদ্যুতের দাম ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশের খবরে তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে একে গণবিরোধী ও সরকারের দায়িত্বহীন আচরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এই পাঁয়তারা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এক বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বলেন, ‘বিদ্যুতের মুলা ঝুলিয়ে রেন্টাল, কুইক রেন্টালসহ অনেক অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে খরচ বাড়ানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ মানুষের কথা না শুনে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র বর্ধিত ও অহেতুক খরচের টাকা জনগণের পকেট থেকে তুলতে দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে।’

বিদ্যুৎসহ জ্বালানি খাতের দুর্নীতি ও ভুল নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করে তাঁরা বলেন, সরকার ও কিছু ব্যক্তির ভুল নীতি ও দুর্নীতির দায় সাধারণ জনগণ নেবে না। অর্ধেকের বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসিয়ে রাখা হয়েছে। এ জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এমনকি সিস্টেম লসে বছরে অপচয় হচ্ছে তিন হাজার কোটি টাকা। সঠিক নীতি, সময়মতো রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বন্ধ, দুর্নীতি, অহেতুক অপচয় ও সিস্টেম লস কমাতে পারলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টি আলোচনাতেই আসত না, বরং দাম কমানো যেত বলে দাবি করেন তাঁরা।

সিপিবি নেতারা বলেন, দেশ এখনো মহামারির সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সাধারণ মানুষের আয় কমেছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ দিশাহারা। এমন সময়ে বিদ্যুতের দাম বাড়লে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। খরচ বাড়বে কৃষি, শিল্প উৎপাদন ও সেবা খাতের। নিত্যপণ্যের দাম আরও বাড়বে। মানুষের মাসিক খরচ বাড়বে। সাধারণ মানুষের যা বহন করার সক্ষমতা নেই।

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়া থেকে সরে এসে অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, কঠোর হাতে দুর্নীতি দমন ও সিস্টেম লস কমাতে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানানো হয়।

জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি বুধবার বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে গড়ে প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির এই সুপারিশ ও গণশুনানির ভিত্তিতে কমিশন দাম বাড়ানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।