মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দুই নেতা নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালের অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পৃথক মিছিল বের হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল আটটায় মহাখালীর কলেরা হাসপাতালের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়ে টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ডের কাছে গিয়ে শেষ হয়। পৌনে নয়টার দিকে আরেকটি মিছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শনির আখড়া থেকে বের হয়ে যাত্রাবাড়ী গোলচত্বর এলাকায় এসে শেষ হয়। এ সময় আশপাশে কোনো পুলিশ ছিল না।
জামায়াতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মহাখালীর মিছিলে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিম নেতৃত্ব দেন। যাত্রাবাড়ীর মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ। মিছিল শেষে তাঁরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্যও দেন।
যাত্রাবাড়ীর সমাবেশে শফিকুল ইসলাম (মাসুদ) বলেন, ‘নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালের এই বক্তব্য মোদির (ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি) দৃষ্টিভঙ্গির বাইরের কোনো বক্তব্য, এটা আমরা মনে করি না। তাই শুধু নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালকে নয়, গোটা বিজেপি ও মোদিকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে মুসলিম জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া এর কোনো বিকল্প নেই।’
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পৃথিবীর ৫৪টি দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আমরা অবাক এবং বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছি, নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের এই সরকার এখন পর্যন্ত নিন্দা-প্রতিবাদ জানাল না। সংসদে প্রস্তাব পেশ করল না। আমরা আশঙ্কা করছি, ভারতের মতো বাংলাদেশকেও ওই ৫৭টি দেশ বিচ্ছিন্ন করে আমাদেরও বিচ্ছিন্নের তালিকায় ফেলে দিতে পারে।’
সমাবেশে এই জামায়াত নেতা জাতীয় সংসদে দ্রুত নিন্দা প্রস্তাব পাস করতে সরকারের প্রতি এবং ভারতীয় সব পণ্য বর্জনের নির্দেশ দিতে বাণিজ্যমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
মহাখালীর সমাবেশে মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ভারতের একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী এখন দেশটিতে ইসলাম, ইসলামি মূল্যবোধ ও ইসলামি স্মারকগুলোকে বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। ভারতের রাজনীতিতে উগ্রবাদীদের এই উত্থান পুরো উপমহাদেশকেই অস্থিতিশীল করে তুলেছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহে প্রমাণ হয় দেশটির উগ্রবাদীরা পরিকল্পিতভাবেই মুসলিম বিদ্বেষ উসকে দিয়ে ভবিষ্যতে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে চায়।
মিছিলে ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের নেতা হেলাল উদ্দিন, দেলওয়ার হোসাইন, কামাল হোসাইন, আবদুল মান্নান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সভাপতি আবুল খায়ের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি তৌহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আর উত্তরের মিছিলে ছিলেন লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ফখরুদ্দীন মানিক, ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, পশ্চিমের সভাপতি সাব্বির বিন হারুন প্রমুখ।