বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএসএমএমইউর চিকিৎসকদের ঘাড়ে কয়টা মাথা আছে যে তাঁরা বলবেন কারাবন্দী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ।
আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য আয়োজিত ‘খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তারেক রহমানের অবৈধ সাজা বাতিল এবং স্বৈরাচার পতন দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বললেন, তিনি (খালেদা) ভালো আছেন। রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যখন বলেন, সব ঠিক আছে। তখন বিএসএমএমইউর চিকিৎসকদের ঘাড়ে কয়টা মাথা যে তাঁরা বলবেন, তিনি খুব খারাপ আছেন। আর সেদিনই তো সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তাই বিচারকেরা কে কতটা সাহস রাখবেন, এটা জানি না।
৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁর মেডিকেল বোর্ড রিপোর্ট না দেওয়ায় শুনানি এক সপ্তাহ পিছিয়ে ১২ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করেন আদালত। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল সরকার আদালত অবমাননা করেছে। বিএসএমএমইউর উপাচার্য (ভিসি) আদালত অবমাননা করেছেন। ৫ তারিখের মধ্যে দুটি প্রতিবেদন চেয়েছিল। কোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন যে এই রিপোর্ট চিকিৎসকদের স্বাক্ষরসহ হাজির করতে হবে। কিন্তু তাঁরা করেননি। সেখানেই তো আদালত অবমাননা হওয়া উচিত ছিল। প্রধান বিচারপতিকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু অবাক হই যখন ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি আদালত অবমাননার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেননি।’
হাইকোর্টের ঘটনাকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন। তাঁর শুনানিতে যাঁরা আদেশ মানলেন না, হাইকোর্ট তাঁদের আরও সময় দিলেন। দুর্ভাগ্য এই জাতির।
মির্জা ফখরুল বলেন, পৃথিবীতে এক ভিন্ন ধারা শুরু হয়েছে। যা গণতন্ত্রের পক্ষে না, একনায়কতন্ত্রের ধারা। তিনি আরও বলেন, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদকে সরিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই জাতি গণতন্ত্রবিহীন অবস্থায়। এরশাদের বিরুদ্ধে যাঁরা আন্দোলন করলেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যাঁরা রাস্তায় নেমে প্রাণ দিয়ে জাতির জন্য লড়াই করলেন, তাঁদের সঙ্গে সেদিন কিন্তু বেইমানি করা হয়েছে। আজকে যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনে গিয়েছেন এবং ক্ষমতা দখল করে আছেন। বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কোনো কাজও করেনি।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে হবে। এটাই এখন দায়িত্ব।
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির প্রমুখ।