ছাত্রদলের কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত ছাত্রদল নিজেরাই নিয়েছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, এর সঙ্গে বিএনপি জড়িত নয়। তবে তিনি এও বলেছেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রদলের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতা, আইনজীবী ও কাউন্সিলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ফখরুল এসব কথা বলেন। বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের কাউন্সিলের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপে হয়েছে, অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার আদালতকে দিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
ছাত্রদলের কাউন্সিলের বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি ছাত্রদলের বিষয়। ছাত্রদলের বিষয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন। তাদের (ছাত্রদল) সিদ্ধান্ত তারা নেবে। আমরা বিএনপি এর সঙ্গে কোনো মতেই জড়িত নই।’ তিনি আরও বলেন, এখন যাঁরা দায়িত্বে আছেন তাঁরাই বলবেন।
বিএনপির মহাসচিব জানান, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রদলের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, এখন পর্যন্ত যা হয়েছে কোনোটাই বেআইনি হয়নি, সবকিছুই আইনসম্মত হয়েছে।
আগামীকাল শনিবার ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার ছাত্রদলের আগের কমিটির ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক আমান উল্লাহ এ কাউন্সিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ঢাকার চতুর্থ সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। শুনানি নিয়ে আদালত ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। একই সঙ্গে ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। এ বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য ৭ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন আদালত। বিএনপির মহাসচিবসহ ১০ জন বিএনপি নেতাকে জবাব দিতে বলা হয়।
বিএনপিকে জবাব দেওয়ার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, যথাসময়ে আদালতের কাছে তাঁদের জবাব উপস্থাপন করবেন।
ছাত্রদলের কাউন্সিলের স্থগিতাদেশে সরাসরি সরকারের হস্তক্ষেপ আছে, অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকারের জবাবদিহি নেই। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পরিবেশ থাকুক, সেটা তারা চায় না। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করছে, তা ভয়াবহ। আদালতকে দিয়ে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।
বিগত নির্বাচনগুলোর প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, আদালতের মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশনের মেয়রদের প্রার্থিতা বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। আদালতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। বিএনপির মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক দলের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, যা নজিরবিহীন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, এ জে মোহাম্মদ আলী, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।