বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে এখনো পর্যন্ত বিএনপি–মনোনীত ধানের শীষের ১৫০ জন প্রার্থীর ওপর আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসী’ ও ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী’ হামলা করেছে।
আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, দুজন প্রার্থীকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে আইনি জটিলতা সৃষ্টি করে প্রার্থী হওয়া অনিশ্চিত করে রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক প্রার্থীদের ওপর ‘গুলিবর্ষণ’ করা হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হামলা করার পর গতকাল ড. কামাল হোসেনের নামে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করা হয়েছে। এই মামলার মাধ্যমে সরকার যে বার্তা দিল, তা ‘নিম্ন রুচির’।
সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সরকারের কাছে আওয়ামী লীগ ও তাদের ‘দোসররা’ ছাড়া আর কারও কানাকড়ি মূল্য নেই। তিনি আরও বলেন, খ্যাতিমান আইনজীবী ও দেশের সংবিধানপ্রণেতাকে মামলার মাধ্যমে যে অপমান করা হলো, সেটি সারা জাতিরই অপমান। এই ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো, সরকার পরিচালিত হচ্ছে ‘দুষ্কৃতকারীদের’ দ্বারা।
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন। ক্ষমতাসীন দল ও নির্বাচন কমিশন একই ‘ঝাঁকের কই’। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য ও কার্যকলাপ পুলিশের ‘ভয়ংকর দমনের’ প্রবণতাকে আরও উসকে দিচ্ছে। তিনি বলেন, দেশব্যাপী পুলিশের চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের ঘুম কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশব্যাপী সহিংসতা, রক্তপাত ও পুলিশি আক্রমণের বিষয়ে কমিশনে অভিযোগ দিলেও ফল মেলেনি।
এ সময় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক ‘মিথ্যা’ মামলা দেওয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
নিজেদের প্রার্থীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে রিজভী বলেন, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনেই বিএনপি প্রার্থীর সমর্থক ও নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতে এই হামলাগুলো সংঘটিত হয়। সব আসনে বিএনপি প্রার্থীর পোস্টার লাগাতে বাধা দেওয়া হয়েছে, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। প্রায় সব প্রচারণার মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে, ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। ৩০০ আসনেই গণগ্রেপ্তার চলছে। এর জন্য তিনি সিইসিকে দায়ী করেন।
সারা দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধা দেওয়া, মামলা, গ্রেপ্তার, নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেওয়ার ঘটনাও তুলে ধরেন রিজভী।