বিএনপির আন্দোলন কোন ঈদের পর, সেটি জানতে চেয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঈদের পর বিএনপি অন্যান্য দলকে নিয়ে আন্দোলনে নামবে—এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি পাল্টা এই প্রশ্ন রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের আন্দোলন কোন ঈদের পরে? আমরা ১২-১৩ বছর ধরে ঈদের পরে, রোজার পরে, বার্ষিক পরীক্ষার পরে, শীতের পরে, বর্ষার পরে তাদের আন্দোলন হবে এ রকম শুনে আসছি। তাই কোন ঈদের পরে সেটি একটু খোলাসা করলে ভালো হয়।’
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নবনির্বাচিত পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী মতবিনিময় করেন। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব আলোচনায় অংশ নেন।
‘আওয়ামী লীগ দেশ ও গণতন্ত্রের শত্রু ও পাকিস্তানের পক্ষের দল এবং জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক’ বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য সম্পর্কে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে দলের জন্ম অগণতান্ত্রিকভাবে, সেই দলের নেতা যখন গণতন্ত্রের কথা বলেন তখন মানুষ হাসে। সুতরাং তাঁদের গণতন্ত্রের কথা বলার অধিকার কতটুকু আছে, সেটিই প্রশ্ন।’
‘বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণা জিয়াউর রহমান পাঠ করেছেন, জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক নন’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা বহুজন পাঠ করেছেন। ২৬ মার্চ প্রথম ঘোষণা পাঠ করেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান, জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শুধু তাঁরাই নন, ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম শহরে যখন বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানি বাহিনীর তাণ্ডব-হত্যাকাণ্ড চলছে, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ অফিসের দপ্তরি নূরুল হক নিজের জীবন বাজি রেখে মাইকিং করে সমস্ত চট্টগ্রাম শহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে শুনিয়েছেন। অপর দিকে জিয়াউর রহমান চারদেয়ালের মধ্যে প্রহরী পরিবেষ্টিত অবস্থায় ২৭ মার্চ ঘোষণা পাঠ করেছেন। স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করার জন্য যদি বাহবা দিতে হয়, তাহলে নূরুল হক অনেক বেশি বাহবা পাওয়ার যোগ্য। নূরুল হকের ভূমিকা অনেক বেশি সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আইনের খসড়া সংসদীয় কমিটিতে গেছে এবং সংসদীয় কমিটি সেটি পরিবর্তন, পরিমার্জন এমনকি ফেরত পাঠানো—সবই করতে পারে, সেই ক্ষমতা কমিটির আছে। সেই সাথে আমি জানিয়েছি, এটি পরিবর্তন-পরিমার্জন করার লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। সুতরাং সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। তবে সবাই শুধু সেখানে অসংগতির কথাগুলো বলছে, ভালো দিকগুলো নিয়ে কেউ আলোচনা করছে না।’
ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু তাঁর বক্তব্যে সাংবাদিকতার উৎকর্ষের জন্য প্রতিবছর জাতীয় বাজেটে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির জন্য ৩ থেকে ৫ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের দাবি উত্থাপন করেন। সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব ডিআরইউ পরিচালিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। তথ্যমন্ত্রী তাঁদের উত্থাপিত বিষয়গুলো বিধি অনুসারে বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দেন।