জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনে বাবা-ছেলেসহ তিনজনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। তিনজনই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই তিনজনের মধ্যে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়ে ধানের শীষ নিয়ে কে নির্বাচন করবেন, তা নিয়ে নেতা-কর্মীসহ সর্বত্রই চলছে জল্পনাকল্পনা। তবে বেশি আলোচনা হচ্ছে বাবা-ছেলেকে নিয়ে।
ওই তিনজন হলেন সাবেক সাংসদ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, তাঁর ছেলে শাহাদৎ জামান ও সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম। এদিকে এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে রশিদুজ্জামান মিল্লাত, আবদুল কাইয়ুম ও শাহিদা আক্তার ওরফে রিতার নাম শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু শাহিদা আক্তার দলের মনোনয়নের চিঠি না পেলেও সবাইকে তাক লাগিয়ে শাহাদৎ জামান চিঠি পান। এই আসনে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ২৭০ জন ভোটার। ১২০টি ভোটকেন্দ্রের ৬৩১ ভোটকক্ষে ওই সব ভোটার তাঁদের ভোট প্রয়োগ করবেন।
দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী বলছেন, রশিদুজ্জামান মিল্লাত ২০০১ সালে সাংসদ থাকার সময় এ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেন। ওই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতি সাধারণ মানুষ অনুপ্রাণিত হয়ে এবারও তাঁকেই চূড়ান্তভাবে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। তাঁকে ছাড়া আসনটি পুনরুদ্ধার কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও যদি তিনি কোনো মামলাসংক্রান্ত জটিলতার ফাঁদে পড়েন, সেই ধারণা থেকে বিকল্প হিসেবে তাঁর ছেলে শাহাদৎ জামানকেও দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
তবে দীর্ঘদিন ধরে এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম। তিনিও দলীয় চিঠি পেয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বকশীগঞ্জ তাঁর নিজের এলাকা। সেখানে তাঁর অবস্থান অনেকটাই ভালো। চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। তবে নেতা–কর্মীরা বলছেন, রশিদুজ্জামান মিল্লাত ছাড়া এ আসন পুনরুদ্ধার অনেকটাই কঠিন কাজ।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্পাদক শ্যামল চন্দ বলেন, ‘এই আসনে রশিদুজ্জামান মিল্লাত সাংসদ ছিলেন। ওই সময়টায় তিনি ব্যাপক উন্নয়ন ও সর্বস্তরের মানুষের পাশে থেকে আস্থা আর্জন করেছিলেন। ফলে এখনো এই এলাকায় তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। একমাত্র এই আসন পুনরুদ্ধার তাঁকে দিয়েই সম্ভব। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মামলার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না শোনা গেলেও, এটা বিভ্রান্তিমূলক খবর। আমার জানা মতে, তাঁর মামলাসংক্রান্ত এখন আর কোনো ঝামেলা নেই।’ তাহলে তাঁর ছেলে নির্বাচনের মাঠে এলেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন মহলের চক্রান্তে ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি অংশ নিতে পারেননি। এবারও যদি এমন ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেই যায়, সেই কারণে এই পরিবারের (মিল্লাত) ওপর আস্থা রেখে কেন্দ্র তাঁর ছেলেকেও মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে। তাঁর ছেলেও এ এলাকায় পূর্বপরিচিত। এই পরিবার ছাড়া আসনটি পুনরুদ্ধার অনেকটাই অসম্ভব।