রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, এই সরকারের আমলেই পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা হয়ে ভারতের শিলিগুড়ি পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ করা হবে। এতে ভবিষ্যতে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে আরও যোগাযোগব্যবস্থা বৃদ্ধি পাবে।
শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলার মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ চত্বরে সংবর্ধনা ও দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন রেলমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেই সঙ্গে পর্যটনে এই জেলার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার উন্নয়নের জন্য পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীর ওপর আরেকটি সেতু ও একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণের জন্য চেষ্টা চলছে।
মকবুলার রহমান সরকারি কলেজে সব বিষয়ে অনার্স কোর্স (যেসব বিষয়ে বাকি আছে) চালুর ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বাস ও কলেজের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।
পিঠা উৎসব বিষয়ে নূরুল ইসলাম বলেন, ‘পিঠা উৎসব বাঙালি সংস্কৃতির একটি অংশ। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের উৎসব উদযাপন করা প্রয়োজন। আমাদের সমাজে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপসংস্কৃতি যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেই মানসিকতা আমাদের সবার মাঝে গড়ে তুলতে হবে।’
এর আগে ওই কলেজের অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন প্রধানের সভাপতিত্বে কলেজের বটমূলে রেলমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আর পিঠা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মজিদ আলী, পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এহেতেশাম রেজা, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হাছান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট ও পিঠা উৎসবের আহ্বায়ক উপাধ্যক্ষ নাজমুল হুদা বক্তব্য দেন। এ সময় কলেজের শিক্ষার্থীরা দলীয় গানের মাধ্যমে মন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানান ও পিঠা উৎসবের বন্দনা করেন।
‘সবারে করি আহ্বান—এসো উৎসুক চিত্ত এসো আনন্দিত প্রাণ’ স্লোগান নিয়ে কলেজ মাঠে শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসব। শনিবার বিকেল পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। উৎসবে বাহারি পিঠাপুলির রকমারি প্রদর্শনী ও বিকিকিনির জন্য কলেজ মাঠে ৩০টি স্টল বসানো হয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থীরা দৃষ্টিনন্দন করে পিঠার স্টলগুলো সাজিয়েছেন এবং নিজেরাই বিভিন্ন পিঠা তৈরি করে নতুন নাম দিয়েছেন।
কুটুমবাড়ি, রসের হাঁড়ি, রূপসী বাংলা, অমরাবতী, পৌষপার্বণ, পিঠাঞ্জলি, বিপ্রতীপ, আবহমান, রংধনু, বর্ণালি স্বপ্নছোঁয়া, রূপশ্রী, অনুরণন, ফাল্গুনীসহ বিভিন্ন নামে কলেজ মাঠে শিক্ষার্থীদের পিঠা স্টলের নামকরণ করা হয়েছে। এসব স্টলে হৃদয়হরণ, ডিম পাতোয়া, নকশি পিঠা, সুইট বল, কালাই পিঠা, গোলাপ পিঠা, বিস্কুট পিঠা, পেনসিল পিঠা, তারা পিঠা, কাঁচকলা ওমলেট, মাছ পিঠা, হাঁস পিঠা, সাবুদানা পিঠা, তিলাবর্তী পিঠা, কামরাঙা পিঠা, আপেল পিঠাসহ বাহারি নামের পিঠা শোভা পায়। অনুষ্ঠান শেষে রেলমন্ত্রীসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা পিঠা উৎসবের স্টলগুলো পরিদর্শন করেন। পিঠা উৎসবের পাশাপাশি দুই দিনই চলবে কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।