রাজধানীতে পরপর তিনটি বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এসব অগ্নিকাণ্ডের পেছনে দখল-পাল্টা দখলের দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। তিনি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড ও দখল-পাল্টা দখলের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ দাবি জানান।
গত সোমবার মধ্যরাতে মহাখালীর সাততলার বটতলা মসজিদ রোডের বস্তিতে আগুন লেগে আড়াই শতাধিক ঘর পুড়ে যায়। পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে মোহাম্মদপুরের জহুরি মহল্লায় বিজলি বস্তিতে আগুন লাগে। এর কয়েক ঘণ্টার মাথায় মধ্য রাতে কালশীর বাউনিয়া বাঁধ বি ব্লকের বস্তিতে আগুনে অন্তত অর্ধশত ঘর ও দোকান পুড়ে যায়।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে তিনটি বস্তির নিম্ন আয়ের অসংখ্য মানুষ ঘরবাড়ি, সম্পদ, অর্থ, পরিধেয় বস্ত্র, এমনকি রান্না করার সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা। বস্তির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্টরা ষড়যন্ত্র করে এসব আগুন লাগিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী বস্তিবাসীদের ধারণা।
আগুন লাগিয়ে দখল-পাল্টা দখল, অসৎ প্রক্রিয়ায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া, অবাধে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির দৌরাত্ম্য নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাঁরা বেপরোয়া।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, মূলত ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্ট ভূমিদস্যু মহলের যোগসাজশ ও অবৈধ প্রভাব এর মূল কারণ। রাজধানীর বস্তিগুলোতে বিভিন্ন সময় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়ে একদিকে ভূমিদস্যুরা প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক বনে যাচ্ছেন। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া অসহায় মানুষ অগ্নিকাণ্ডের কারণে এক বস্তি থেকে অন্য বস্তিতে ছুটে বেড়াচ্ছেন একটু মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের জন্য। তবু সরকার, প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই বিষয়গুলো ন্যূনতম ভ্রুক্ষেপ না করে নির্বিকার থাকছে।
সরকারের মন্ত্রী-সাংসদেরা উন্নয়নের জোয়ারের কথা বলতে বলতে হয়রান হয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘অথচ দেশে প্রকৃত অর্থে কিসের উন্নয়ন হচ্ছে, তা এসব বস্তি ও বস্তিবাসীর দিকে তাকালেই সেই চিত্র ফুটে ওঠে।’ তিনি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের স্থায়ী পুনর্বাসন, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ ও আর্থিক সহযোগিতার দাবি জানান।