প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য পরামর্শক নিয়োগ দেওয়ার আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের কাছে এ–সংক্রান্ত চিঠি পৌছে দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার কাছে লেখা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই চিঠিতে বলা হয়েছে, নিয়োগ পাওয়া ৪৫ কর্মকর্তা নির্বাচনকে প্রভাবিত করবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ–সংক্রান্ত এক চিঠি থেকে জানা যায়, সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য জেলা প্রশাসকেরা তিন বছর মেয়াদি অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ দেওয়ার ৪৫ জন পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক আমলা আছেন। ৮ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ–সংক্রান্ত চিঠি জারি করা হয়। একই দিন সন্ধ্যায় ইসি একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।
তবে ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ আজ সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চিঠিটি ১৩ নভেম্বর স্থগিত করা হয়েছে।
বিএনপির চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ দেওয়ার নামে সংশ্লিষ্ট জেলার বাসিন্দা ও ওই জেলায় কর্ম–অভিজ্ঞতা আছে, এমন চাকরিরত ও অবসরে যাওয়া ৪৫ জন সচিবকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা সবাই জেলা প্রশাসকদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং এসব কর্মকর্তার অনেকের অধীনে জেলা প্রশাসকেরা এখনো চাকরি করছেন বা করেছেন। এ ছাড়া নিয়োগ পাওয়া অধিকাংশ কর্মকর্তাকে নিজ জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যা জেলা প্রশাসক বা রিটার্নিং কর্মকর্তার নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনকে বিঘ্নিত করবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা গত ১০ বছরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন বা করছেন। ইসি সচিবালয়ের সচিবকেও পরামর্শক হিসেবে তাঁর নিজ জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে বলে বিএনপি বিশ্বাস করে।
বিএনপি আরও বলেছে, এ বিষয়ে ইসি ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তারা আদালতের আশ্রয় নেবে।
এ বিষয়ে আজ সন্ধ্যায় সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ৮ নভেম্বর ৪৫টি জেলায় ৪৫ জন সরকারি কর্মকর্তা এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মেন্টর নিয়োগ করা হয়েছিল। ১৩ নভেম্বর এই মেন্টর নিয়োগের আদেশটি স্থগিত করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিষয়টি অনেক আগে থেকে প্রচলিত। এটি যেহেতু স্থগিত হয়ে গেছে, তাই এটি নিয়ে কথা বলার কিছু নেই। তিনি বলেন, ইসি এটি নিয়ে অবহিত ছিল না।