প্রধানমন্ত্রীকে হয়তো ভুল বোঝানো হয়েছে: বহিষ্কারের পর জাহাঙ্গীর

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম
ফাইল ছবি

দল থেকে বহিষ্কারের ‘প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নেওয়ার’ কথা জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি গাজীপুর নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও।

আজ শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় জাহাঙ্গীর আলমকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি এবং দলীয় সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত এক সাংগঠনিক সম্পাদক এ তথ্য জানান প্রথম আলোকে।

এ সিদ্ধান্তের পর জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হয়তো ভুল বোঝানো হয়েছে বা ভুল মেসেজ দেওয়া হয়েছে। উনি সঠিকটা জানলে হয়তো কোনো দিনই ব্যবস্থা নিতেন না।’

আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জাহাঙ্গীরের মন্তব্য ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তাঁরা জাহাঙ্গীরের বহিষ্কার দাবি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। ১৮ অক্টোবরের মধ্যে এর জবাব দেন জাহাঙ্গীর।

জাহাঙ্গীর আলম আজ বলেন, ‘যেহেতু করোনাকালীন, তাই হয়তো একমুখো শুনেছেন, তাই হয়তো এমনটা হয়েছে। তারপরও তিনি অভিভাবক, রাষ্ট্রের, দেশের, দলের। উনি যা ভালো মনে করে করেন, আমি মাথা পাইতা নিব।’

রাত আটটার দিকে তাঁর বহিষ্কারের খবর গাজীপুরে ছড়িয়ে পড়লে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, জয়দেবপুর শহর ও টঙ্গী এলাকায় জাহাঙ্গীরবিরোধীরা আনন্দ মিছিল বের করেন। চান্দনা চৌরাস্তার এলাকায় মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফজাল হোসেন কল্লোলের নেতৃত্বে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে শুরু করে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়ক এলাকার প্রদক্ষিণ করে। এ সময় আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা–কর্মীরা মিছিলে যোগ দেন। মিছিলে গাজীপুর সিটি করপোরেশন ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রহিজ উদ্দিন, ১৭ ওয়ার্ডের ইয়াজ উদ্দিন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মফিজুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের নেতা লুৎফর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে জাহাঙ্গীরের অনুসারীরা গাজীপুরে মেয়রের নিজ বাসভবনে ভিড় করতে থাকেন। এ সময় বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররাও সেখানে উপস্থিত হন। জাহাঙ্গীর–ভক্ত গাজীপুরের বাসন এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে, তাই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি দলীয় পদ পাওয়ার পর প্রতিটি ক্ষেত্রেই চাঁদাবাজি, দখলবাজি বন্ধ করতে কার্যকর ভূমিকা নিয়েছেন।

মেয়র জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মেয়র হওয়ার পর গাজীপুরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি, যা অতীতে কখনো হয়নি। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর দলের নেতা–কর্মীদের চাঁদাবাজি বন্ধ করেছি। দলকে আরও সুসংগঠিত করেছি।’