বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, নয়াপল্টনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে নেতা-কর্মীরা যখন ঘরে ফিরছিলেন, তখনই পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, এ সময় পুলিশ নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করেছে। কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে। গুলি করেছে। এতে অনেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। অনেককে আটক করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। সেখানে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে সরকারের চরম ব্যর্থতার প্রতিবাদে আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির শেষে শান্তি মিছিল করার কথা ছিল। প্রথম দিকেই পুলিশের লোকেরা নেতা-কর্মীদের আটক করা শুরু করে। সমাবেশের পর নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে ঘরে ফিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ অতর্কিতে তাঁদের ওপর হামলা করেছে।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ফখরুল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পুলিশের সদস্যরা পার্টি অফিসের নিচে রয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করছি, নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেওয়ার দাবি করছি।’
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সমাবেশ শেষে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় পার হওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
মতিঝিল জোনের উপকমিশনার (ডিসি) আবদুল আহাদ বলেন, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আমরা বাধা দিইনি। তাদের মিছিলের অনুমতি ছিল না। তবু তারা মিছিল করছিল।’ তিনি আরও বলেন, বিএনপিই পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ধাওয়া দেয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিবের আলোচনার এক ঘণ্টা পর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একজনকে আটক করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য হাসানের ভাষ্য, যাঁকে আটক করা হয়েছে, তিনি বিএনপির কর্মী। তিনি তাঁর পরিচয় গোপন রেখে সিটি করপোরেশনের স্টিকার লাগিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে নয়াপল্টনে এসেছেন। সংঘর্ষের সময় তিনি পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ জন্য তাঁকে আটক করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এই সরকার জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে নির্যাতন-নিপীড়ন করছে। গণতান্ত্রিক স্পেসটুকু সংকুচিত করে দিচ্ছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিল করতে দেওয়া হয় না। সুতরাং এই সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণ ব্যাপারটা আর নেই। তারা শান্তিতে বিশ্বাস করে না।’
আজকের ঘটনার দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণ সরকারকেই বহন করতে হবে বলে দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের মূলে রয়েছে সরকারের এসব কর্মকাণ্ড। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারাই এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। দেশ ও দেশের মানুষকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।