প্রতিবছরের মতো এবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সম্মানে ইফতার মাহফিল করেছে বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় তাঁকে ছাড়া ইফতার করে দলটি। যদিও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, কারাবন্দী খালেদা জিয়ার ইফতারের জন্য ৩০ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এ কারণে আজকের ইফতার মাহফিলে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্যও ৩০ টাকার ইফতারসামগ্রী বরাদ্দ রাখে বিএনপি।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে বিএনপির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০–দলীয় ঐক্যজোট, পেশাজীবী নেতারা অংশগ্রহণ করেন। কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের আশু আরোগ্য কামনাসহ আটক নেতা-কর্মীদের জন্য দোয়াও করা হয়।
ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমাদের এই আয়োজনে অংশ নিতে হচ্ছে। আপনারা সবাই জানেন যে গণতন্ত্রের মাতা (খালেদা জিয়া) দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। তাঁকে সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলায় কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই রমজান মাসে যখন আমরা এখানে সমবেত হয়েছি, তখন তিনিও কারাগারে থেকে বন্দী অবস্থায় পিজি হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) ছোট্ট একটি কক্ষে ইফতারের জন্য অপেক্ষা করছেন। তাঁর ইফতারের জন্য সরকারের বরাদ্দ মাত্র ৩০ টাকা।’ তিনি বলেন, ‘সে কারণে আজকে আমাদের ইফতারের আয়োজনও ৩০ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। আমরা অভ্যাগত সুধীবৃন্দদের কাছে, আমাদের অতিথিদের কাছে অনুরোধ জানাব, আপনাদের কষ্ট হলেও আপনারা দয়া করে এটাকে স্বীকার করে নেবেন। শুধু নেত্রীর প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য।’
ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে জগদ্দল পাথরের মতো একটি জগদ্দল সরকার চেপে বসে আছে। সম্পূর্ণভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে, গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। একটি একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়েছে, রাষ্ট্রের স্তম্ভ ভেঙে দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আসুন আমরা সবাই আল্লাহর কাছে এ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করি।’
বিএনপির ৩০ টাকার ইফতারের মধ্যে ছিল দুটি খেজুর, একটি জিলাপি, একটি বেগুনি, একটি পেঁয়াজি, ছোলা বুট ভাজি, মুড়ি এবং ছোট এক বোতল পানি।
ইফতার মাহফিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে গণফোরামের আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মহসিন রশিদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, আফসারী আমিন আহমেদ, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, এস এম আকবর, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২০–দলীয় জোটের জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান, হামিদুর রহমান আজাদ, আবদুল হালিম, তাসনীম আহমেদ, সেলিমুদ্দিন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব, খেলাফত মজলিশের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসহাক, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এম এম আমিনুর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, মুসলিম লীগের এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডিএল-এর সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ ইফতারে উপস্থিত ছিলেন।
পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক শরীফউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকতউল্লাহ বুলু, খন্দকার মাহবুব হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল মান্নান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, শওকত মাহমুদ, নিতাই রায় চৌধুরী, আমনউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফরহাদ হালিম ডোনার, ফজলুর রহমানসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।