আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে তাদের অবস্থা বঙ্গবন্ধু আমলের ন্যাপের মতো হবে। তিনি আরও বলেছেন, নির্বাচনের বাইরে অবৈধ কোনো শক্তি ক্ষমতা নিতে পারবে না। ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা নিতে চাইলে আইনে তাদের মৃত্যুদণ্ড হবে।
আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ সেলিম। এর আগে দুপুরে বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে নগরের কিং অব চিটাগং কনভেনশন সেন্টারে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
এ সময় শেখ সেলিম বলেছেন, কেউ ভোটে আসতে না চাইলে আসবে না। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে তাদের অবস্থা হবে বঙ্গবন্ধুর শাসন আমলের ন্যাপের মতো। তাদের অস্তিত্ব থাকবে না।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে খুনি আখ্যায়িত করে শেখ সেলিম বলেন, তিনি (জিয়া) বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিলেন। সত্যকে ঢেকে রাখা যায় না। জিয়ার সব কুকীর্তি বের হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য আরও বলেন, জাতীয় সরকার ফর্মুলা যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করতে চাইছেন। নির্বাচন হবে শেখ হাসিনার অধীনে। নিয়মতান্ত্রিক সংবিধান অনুযায়ী।
উদ্বোধনী বক্তব্যে যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, অগণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতায় আনতে এক–এগারোর কুশীলব, কিছু আন্তর্জাতিক শক্তি ও সুশীলেরা সক্রিয়। তিনি আরও বলেন, সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের নীলনকশা বাস্তবায়নে পরিকল্পিতভাবে তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
সুশীল সমাজের একটি অংশ জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তৎপর বলে অভিযোগ করেন শেখ ফজলে শামস পরশ। তিনি বলেন, তারা (সুশীল সমাজ) এক–এগারোর কুশীলবদের সক্রিয় করতে চায়। জাতীয় সরকারের ধারণা নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। কিছু গণমাধ্যম এখন বিরোধী দলের ভূমিকায় নেমেছে। সব মিলিয়ে দেশকে সংকটময় ও সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে মরিয়া একটি মহল।
যুবলীগের সভাপতি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার পর সমাজের কিছু বিশিষ্টজন ধেই ধেই করে জিয়ার সরকারের উপদেষ্টা হয়েছিলেন। সেদিন তারা হত্যা-মানবাধিকার নিয়ে কিছু বলেননি। প্রশ্ন তোলেননি।’
সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে সংবিধান আনুসারে হবে। যারা জাতীয় সরকারের কথা বলছে, তারা অসাংবিধানিক পন্থা খুঁজছে। কিছু বুদ্ধিজীবী, সুশীল ক্ষমতায় গিয়ে মন্ত্রী-উপদেষ্টা হতে চায়। তারাই জাতীয় সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখে। তা দিবাস্বপ্ন। কখনো সফল হবে না।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ-সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু এতে সভাপতিত্ব করেন। যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন।
এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে নগরীর প্রবর্তক, মেডিকেল, পাঁচলাইশ এলাকা মিছিলে মিছিলে জনারণ্য হয়ে পড়ে। এতে তীব্র যানজট দেখা দেয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রবর্তক মোড় থেকে পাঁচলাইশ থানার মোড় পর্যন্ত ও আর নিজাম রোডটি। এতে ওই সড়ক ও আশপাশে অবস্থিত হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।