এইচ এম এরশাদের ‘অবর্তমানে’ বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিদেশে থাকাকালীন জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। আজ শুক্রবার জাপার পক্ষ থেকে এরশাদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত বুধবার ‘সাংগঠনিক নির্দেশনা’ শিরোনামে লেখা এরশাদের চিঠিটি আজ শুক্রবার এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী গণমাধ্যমে পাঠান।
প্রথম আলোতে গত ১৪ জানুয়ারি ‘এরশাদের ‘অবর্তমানে’ জাপার নেতৃত্বে কে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। জাপা থেকে পাঠানো এরশাদ স্বাক্ষরিত নতুন চিঠিতে ‘অবর্তমান’ ও বিদেশে থাকা অবস্থায় দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন জিএম কাদের— এমন ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে এরশাদ গত ১ জানুয়ারি এক চিঠিতে তাঁর অবর্তমানে জাপার চেয়ারম্যান পদে তাঁর ভাই জি এম কাদেরের নাম ঘোষণা করেছিলেন। ‘অবর্তমান’ শব্দটি স্পষ্ট না হওয়ায় দলের ভেতরে এ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়।
এরশাদ এখন খুবই অসুস্থ। ৫ জানুয়ারি থেকে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন। তিনি উঠে দাঁড়াতে পারেন না বলে জানিয়েছেন দলের একজন নেতা। যে কোনো সময় তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হতে পারে চিকিৎসার জন্য। তিনি সিঙ্গাপুর গেলে কি চেয়ারম্যান পদে বদল আসবে? দলীয় নেতাদের কাছে তা স্পষ্ট হয়নি। এদিকে এরশাদের অবর্তমানে জাপার চেয়ারম্যান পদটি পেতে চান রওশন এরশাদ।
গত ১৩ জানুয়ারি জাপার কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেছিলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার আগে নিশ্চয়ই তাঁর “অবর্তমানে” শব্দের ব্যাখ্যা দিয়ে যাবেন। তখন বোঝা যাবে, অবর্তমানে বোঝাতে তিনি আসলে কী বুঝিয়েছেন।’
গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর এরশাদের নেওয়া দুটি সিদ্ধান্ত নিয়ে জাপায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সিদ্ধান্ত দুটি হলো: এক. এরশাদের অবর্তমানে জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান হওয়া। দুই. জাপা বিরোধী দলে থাকবে। দলটির কেউ মন্ত্রী হতে পারবেন না।
এই দুই সিদ্ধান্ত রওশনপন্থী হিসেবে পরিচিত অংশকে ক্ষুব্ধ করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ৩ জানুয়ারি জাপার ২১ সাংসদকে নিয়ে বনানী কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন রওশন এরশাদ ও জি এম কাদের। বৈঠকে সরকারে থাকা না-থাকা নিয়ে আলোচনায় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ সাংসদ সরকারি দলে থাকার পক্ষে মত দেন। তবে সম্প্রতি জিএম কাদের একাধিকবার বলেছেন, জাপাতে কোনো বিরোধ নেই।