>* জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারিতে তফসিল হতে পারে
* মার্চে প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা
* ছয় বা সাত ধাপে ৪৯২টি উপজেলায় ভোট হতে পারে
* উপজেলা পরিষদে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন
* নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি
দলীয় প্রতীকে ধাপে ধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এরই মধ্যে দেশের সব উপজেলা পরিষদের সর্বশেষ তথ্য ইসিকে জানাতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী মার্চে প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এ নির্বাচনেও সীমিত পরিসরে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে।
উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখের আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পরিষদের প্রথম বৈঠক (সভা) থেকে মেয়াদ শুরু হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপর চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে কয়েক ধাপে ওই নির্বাচনের ভোট হয়।
ফলে ২০১৪ সালের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে উপজেলা পরিষদগুলোতে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, জুলাই মাসের আগে শেষ হচ্ছে এমন উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। জুলাইয়ের পরে যেসব উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে সেগুলোর নির্বাচনের তারিখ পরে সুবিধাজনক সময়ে ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে উপজেলার নাম উল্লেখ করে সর্বশেষ নির্বাচনের তারিখ, উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের শপথ গ্রহণ এবং প্রথম বৈঠকের তথ্য জানাতে বলা হয়েছে। প্রায় একই ধরনের তথ্য দিতে ইসির ১০ আঞ্চলিক কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তথ্য পাওয়ার পর কোন উপজেলাগুলো নির্বাচনের উপযোগী হয়েছে, তা পরিষ্কার হবে।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই করতে হবে। ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা থাকার কারণে জানুয়ারির শেষে অথবা ফেব্রুয়ারিতে তফসিল দেওয়া হতে পারে। আগামী মার্চ মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এবার দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একসঙ্গে নির্বাচন হবে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রাথমিক কাজগুলো এগিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট শাখা। এবার ছয় বা সাত ধাপে ৪৯২টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হতে পারে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা দেড় শতাধিক উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। তবে এবার উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধকল দলটি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। দলের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় নির্বাচন হয়েছিল ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী মো. মাছুদুর রহমান। গতকাল বুধবার মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেব কি না, সেটি দলীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আগেরবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী অর্ধেক ভোটও পাননি। তবে এবার জাতীয় নির্বাচন যেভাবে হয়েছে, সেভাবে ভোট হলে পরিস্থিতি কী হবে, জানি না।’
১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়। ১৯৯০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৯ সালে তৃতীয়বারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।