আনুষ্ঠানিকভাবেই দুই ভাগ হয়ে গেল গণফোরাম। ড. কামাল হোসেনের বাইরে আরেক অংশের সভাপতি হিসেবে মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন গণফোরামের আরেক নেতা সুব্রত চৌধুরী এবং সহসভাপতি হয়েছেন আবু সাইয়িদ।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণফোরাম নেতা মোস্তফা মোহসীন নেতৃত্বাধীন গণফোরামের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠান হয়। এতে ১৫৭ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কাউন্সিল উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন ড. কামাল হোসেন।
গণফোরামের এই কাউন্সিলে দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন অংশের কেউ ছিলেন না। তবে ড. কামাল হোসেন একটি লিখিত শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান। মোস্তফা মোহসীন তা পড়ে শোনান। সেখানে বলা হয়, তিনি অসুস্থতার কারণে যোগ দিতে পারেননি। তবে কাউন্সিলকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং সফলতা কামনা করেন। শুভেচ্ছাবার্তায় ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য উদ্ধৃত করে মোস্তফা মোহসীন বলেন, ‘আমি সব সময় ঐক্যের কথা বলেছি। আশা করি, গণফোরামের সব নেতা–কর্মী ও সমর্থকগণ ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাবেন।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গঠিত হওয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা এই কাউন্সিলে উপস্থিত হয়েছিলেন। গণফোরামের এই অংশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, জাসদ একাংশের নেতা নাজমুল হক প্রধান, জেএসডি নেতা তানিয়া রব ও বিকল্পধারার একাংশের নেতা বাদল।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই গণফোরামে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গণফোরামে যোগ দিয়ে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০১৯ সালে গণফোরামের কাউন্সিলের পর ৫ মে দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদকের পদে বসান। এর পর থেকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীনসহ দলের কিছু জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে রেজা কিবরিয়ার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একপর্যায়ে দলে দুটি ভাগ হয়ে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার চলে। বিরোধী পক্ষের নেতৃত্ব দেন মোহসীন। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেজা কিবরিয়ার পদত্যাগের পর দুই অংশের এক হওয়ার কথাও শোনা যায়। তবে শেষ পর্যন্ত তারা ভাগ হয়েই গেল।