তফসিল ঘোষণার পরও চট্টগ্রামে বিএনপি নেতা-কর্মীদের পুলিশি হয়রানি বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এ কারণে নির্বাচনী পরিবেশ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলেও মনে করছে দলটি। আজ রোববার চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের কাছে দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এ অভিযোগ করা হয়।
রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এ সময় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বিএনপি বলেছে, গত দুই মাসে মহানগরে ১৪০টি মামলা এবং ২০৮ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এম নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘২০৮ নেতা ছাড়াও অনেক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। হাইকোর্টের জামিনে থাকা সত্ত্বেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এভাবে নির্বাচনী পরিবেশ পক্ষপাতমুক্ত হচ্ছে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি আমরা।’
বিএনপি স্মারকলিপিতে বলেছে, ‘তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের এ ধরনের আচরণে আমরা গভীর উদ্বিগ্ন। নির্বাচন কমিশন দেশে ও বিদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ কারণে দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেয়। এ অবস্থায় পুলিশের এভাবে গ্রেপ্তারের ঘটনা নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’
স্মারকলিপিতে উদাহরণ দিয়ে আরও বলা হয়, নগর যুবদল নেতা জমির উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকার পরও ১৪ নভেম্বর চান্দগাঁও থানা-পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ ছাত্রদল নেতা সাইফুদ্দিন কামরান ও মো. নাজিম উদ্দিন সদরঘাট থানার মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় ১৬ নভেম্বর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ কারাফটকে পুনরায় গ্রেপ্তার তাঁদের করে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের এমন আচরণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তফসিলে নির্বাচনী আচরণবিধি ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থানে সভা–সমাবেশ করে চলেছে।
বিএনপির দাবি, মনোনয়নপত্র নেওয়া কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, সহসভাপতি ইকবাল চৌধুরী, বেলায়েত হোসেন, অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক। এ কারণে তাঁরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারছেন না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী এবং গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তি দাবি করা হয় স্মারকলিপিতে।
এ বিষয়ে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, স্মারকলিপি গ্রহণ করে সেটি কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সহসভাপতি আব্দুস সত্তার, নুরুল আলম, উপদেষ্টা জাহিদুল করিম, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী, আব্দুল মান্নান, সহদপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী, নগর মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফাতেমা বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী।