ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হল শাখার এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে ছাত্রদলের ওই কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে মারধরের ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগে বলা হয়।
মারধরের শিকার হওয়া ওই ছাত্রদল কর্মীর নাম মেহেদী হাসান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রদলের কর্মী। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। মারধরকারী ব্যক্তিদের মধ্যে বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ইউনূস ছাড়া অন্যদের চেনেন না বলে জানিয়েছেন মেহেদী।
মারধরের শিকার মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ রোববার বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে আমার মিডটার্ম পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শুরুর আগে আমি ও আমার কয়েকজন বন্ধু কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে মধুর ক্যানটিন হয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে আসি। মধুর ক্যানটিনের সামনে আবু ইউনূসসহ ১০ থেকে ১৫ জন ছিলেন। আবু ইউনূস আমাকে ডাকলে আমি যাই। তাঁরা আমাকে ঘিরে দাঁড়ান। ছাত্রলীগের কারা ছাত্রদল করেন, বিভিন্ন হলে কারা ছাত্রদল করেন—এ বিষয়ে তাঁরা আমার কাছে জানতে চান। তাঁরা আমার মোবাইল ফোন নিয়ে কন্টাক্ট লিস্ট ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চেক করেন। আমার আইডি কার্ড ও মানিব্যাগও নিয়ে নেন। পরে মানিব্যাগ ফেরত দিলেও তাতে থাকা ৫০০ টাকা খুঁজে পাইনি এবং আইডি কার্ডটি আর ফেরত দেননি। আমি তাঁদের প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ায় তাঁরা আমাকে মাটিতে ফেলে কিল, ঘুষি ও লাথি মারেন। আবু ইউনূস ছাড়া অন্যদের আমি চিনতে পারিনি।’
এই ঘটনায় অভিযুক্ত আবু ইউনূসের দাবি, তিনি মেহেদী হাসানকে কোনো ধরনের মারধর করেননি। ইউনূস বলেন, ‘মধুর ক্যানটিনের সামনে তখন অনেক লোকজন ছিলেন। তার গায়ে কেউ হাত দিয়েছে কি না, আমি জানি না। তাকে ডেকে আমি জানতে চাই, সে কোন বর্ষে পড়ে, আর ছাত্রদল করে কি না। সে বলে, সে প্রথম বর্ষে পড়ে এবং ছাত্রদল করে। আমি তাকে বলি, তুমি প্রথম বর্ষে পড়ো, মধুতে এসেছ কেন, চলে যাও।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রথম বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান মিডটার্ম পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তাকে তথ্য-প্রমাণসহ লিখিতভাবে আমাদের কাছে অভিযোগ দিতে বলেছি। হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্যই সেটি দেখবে।’
অভিযুক্ত আবু ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আজ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আমি মধুর ক্যানটিনে ছিলাম। এ ধরনের কোনো ঘটনা শুনিনি। তবু যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নেব।’