মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে ফ্রান্সে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন এবং এর রেশ ধরে দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর ‘ইসলামবিদ্বেষী’ অবস্থানের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন। সমাবেশে দলের আমির ও চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম ফ্রান্সের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক বিক্ষোভ মিছিল–পূর্ব সমাবেশে সৈয়দ রেজাউল করিম এ দাবি জানান।
এর আগে সকালে ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ঢাকায় ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে জমায়েত হন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়, বিজয়নগর, কাকরাইল হয়ে শান্তিনগর পৌঁছালে পুলিশ কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে তাঁদের আটকে দেয়। সেখানে দলের আমির সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার প্রতিবাদে ফ্রান্সের পণ্য বর্জনে একাত্মতা ঘোষণা করেন রেজাউল করিম। চরমোনাইয়ের পীর এই ঘটনার জন্য ফ্রান্স সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কড়া প্রতিবাদ জানাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মহানবী (সা.)–এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন তিন দিনের কর্মসূচি দিয়েছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৯ অক্টোবর সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল, ৩০ অক্টোবর সব মসজিদ থেকে ইমাম ও খতিবদের নেতৃত্বে মিছিল এবং ১৩ নভেম্বর রাজধানীর ধোলাইরপাড়ে ‘মূর্তিবিরোধী’ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বায়তুল মোকাররমের জমায়েতে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ ও নূরুল হুদা ফয়েজী, রাজনৈতিক উপদেষ্টা আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুর রহমান ও গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ আলম, উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলে বারী মাসউদ, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আহমাদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।
এদিকে মহানবী (সা.) ও ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে জাতিসংঘসহ সব অভিভাবক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আঞ্জুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীতে জশনে জুলুশ (শোভাযাত্রা) পরবর্তী মাহফিলে আলোচকেরা এ আহ্বান জানান।
সকাল ১০টায় মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়বিয়া আলিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে ঈদে মিলাদুন্নবী(সা.)–এর জশনে জুলুশ বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সেখানেই এসে শেষ হয়। সেখানে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল আলিম রিজভী মোনাজাত করে জশনে জুলুশ শেষ করেন। পরে বেলা দেড়টায় কাদেরিয়া তৈয়বিয়া মাদ্রাসা মাঠে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)–এর আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সাংসদ মুহাম্মদ সাদেক খান। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিল সলিম উল্লাহ, মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আবুল কাশেম মুহাম্মদ ফজলুল হকসহ ঢাকা আঞ্জুমান ও গাউসিয়া কমিটির নেতারা। এতে সভাপতিত্ব করেন আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন।