ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে বৃহত্তর ঐক্য গড়তে চাইছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্রঐক্য। এই ঐক্যের ভিত্তি হিসেবে ১১ দফা ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করেছে তারা। এই দফাগুলোর সঙ্গে একমত সবাইকে নিয়ে তাদের প্যানেল সাজানো হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনগুলো।
আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য। সেখানে বৃহত্তর ঐক্যের ভিত্তি হিসেবে ১১ দফা তুলে ধরা হয়।
দফাগুলোর মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাস, দখলদারি ও প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্রমুক্ত গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেধা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিটের ব্যবস্থা, গেস্টরুম ও গণরুমে ছাত্র নির্যাতন বন্ধ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ছাত্রসংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বাণিজ্যিক কোর্স বন্ধ, শিক্ষা-গবেষণা ও ছাত্র অধিকার সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ বাড়ানো, ইউজিসির কৌশলপত্র বাতিল, ধর্মভিত্তিক, সাম্প্রদায়িক, জাতিগত ও লৈঙ্গিক বৈষম্য সৃষ্টিকারী অপতৎপরতা নিষিদ্ধ, ’৭৩–এর অধ্যাদেশের অসম্পূর্ণতা দূর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত, উচ্চশিক্ষা কমিশনের অপতৎপরতা প্রতিরোধ, শিক্ষা-চিকিৎসাসহ মৌলিক অধিকার নিয়ে ব্যবসা বন্ধ, শিক্ষার সব স্তরে বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ ও সাম্প্রদায়িকীকরণ বন্ধ করে সর্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক একই পদ্ধতির শিক্ষানীতি, শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা, তা না হলে বেকার ভাতার ব্যবস্থা, গণমানুষের ন্যায্য আন্দোলনে সংহতি জ্ঞাপন, শাসকশ্রেণির নয়, শ্রমিক-কৃষক-জনগণের মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষায় সমতা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ৷
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল কবীর৷
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘ডাকসু নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকাণ্ড একদিকে আমাদের মধ্যে আশাবাদের সঞ্চার করেছে, অন্যদিকে আশঙ্কার মাত্রাও বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের দাবিগুলো প্রশাসনের কাছে নানাভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন সেগুলো উপেক্ষা করেছে।’ সে সময় দুই জোটের আগের দাবিগুলো আবারও তুলে ধরা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র আবাসিক হলের পরিবর্তে একাডেমিক ভবনে করা, শ্রেণিকক্ষে প্রচার চালানোর সুযোগ ইত্যাদি৷
সংবাদ সম্মেলনে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি আতিফ অনীক, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ডাকসু নির্বাচনে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আন্দোলনের মঞ্চ ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসছে বামপন্থী দুই জোট। টিএসসির মুনীর চৌধুরী মিলনায়তনে আজ বিকেলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।