ছাত্রলীগ ও যুবলীগ যেখানে–সেখানে অন্য দলের মানুষকে আক্রমণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, এসব হামলা-নির্যাতনে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী ও ভিন্নমতের নাগরিকেরা ছাড়াও সাধারণ মানুষও শিকার হচ্ছেন।
রাজধানীর পল্টনে আজ শনিবার দুপুরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তাঁরা এসব কথা বলেন। গণ অধিকার পরিষদের উদ্যোগে ‘বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও ভিন্নমতের নাগরিকদের ওপর হামলা-মামলা, হুমকি-হয়রানি ও গুমের শিকার নাগরিকদের সন্ধান’–এর দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করা হয়।
গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক বলেন, ‘আজকে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে পাগলা ঘোড়ার মতো বেপরোয়া ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা অন্য দল ও ভিন্নমতের নাগরিকদের ওপর হামলা করেছে। শুধু হামলাই করছে না, দেশের আদালত চত্বরকেও রক্তাক্ত করেছে। বর্তমান বিনা ভোটের সরকার ১৩ বছর ধরে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে আছে, ভবিষ্যতেও স্বৈরতন্ত্র কায়েম করতে চায়।’
বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিলটি পল্টনের জামান টাওয়ারের নিচ থেকে শুরু হয়। গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা মিছিলটি নিয়ে জিরো পয়েন্ট হয়ে প্রেসক্লাবের দিকে এগিয়ে গেলে সেখানে যুবদলের একটি কর্মসূচি চলায় মিছিলটি আবার ফিরে এসে পল্টন জিরো পয়েন্টে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। কর্মসূচি চলাকালে অন্তত আধা ঘণ্টা পল্টন মোড় দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
বিক্ষোভ সমাবেশে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি রেজা কিবরিয়া বলেন, দেশে নৈরাজ্য চলছে। ছাত্রলীগ রাস্তায় রাস্তায় মানুষকে আক্রমণ করছে। তারা আদালতে গিয়েও আক্রমণ করেছে।
দেশের অর্থনীতিকে ‘ফরমালিন ইকোনমি’ উল্লেখ করেন রেজা কিবরিয়া। তিনি বলেন, ‘ফরমালিন দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে বলে টের পাওয়া যাচ্ছে না। ভেতরে-ভেতরে পচন ধরেছে। এটা যখন দেখা যাবে, তখন আপনারা শ্রীলঙ্কা (দেশকে) দেখবেন। টাকা পাচারের জন্য তাঁদের আত্মীয়স্বজন ধরা পড়েছে। কত টাকা যে নিয়ে গেছে, তার কোনো হিসাব নেই। এই টাকাগুলো ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে আমরা ঐক্যবদ্ধ সব বিরোধী দলের সঙ্গে। জনগণের টাকা আমরা জনগণের কাছে ফেরত দেব।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আগেই থেকেই অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করছিল জাতীয়তাবাদী যুবদল। গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হকের নেতৃত্বে বেলা ১১টার দিকে মিছিলটি সেখানে গিয়ে আটকা পড়ে। পরে সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে গণ অধিকার পরিষদের মিছিলটি আবার পল্টন জিরো পয়েন্টে ফেরে।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে নুরুল হক বক্তব্যে বলেন, ‘আপনারা অতীতে ক্ষমতায় ছিলেন; ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার পতন হলে একটি সম্মিলিত সরকার গঠিত হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সেখানে থাকবে। কিন্তু আপনাদের আচরণ যদি এখনো অসহিষ্ণু হয়, আপনাদের দ্বারা মানুষ কীভাবে সহনশীল রাষ্ট্র আশা করবে? আমরা প্রেসক্লাবের এখান থেকে শান্তিপূর্ণ একটি মিছিল নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা দেখেছি, একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি চলছে। তাদের সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দ আমাদের জায়গা করে দেওয়ার কথা বললেও নেতা–কর্মীরা আমাদের জায়গা দেয়নি। আপনাদের এই অসহিষ্ণু আচরণ প্রমাণ করে, আপনাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সহনশীলতা তৈরি হয়নি।’