ছাত্রদলকে ঠেকাতে ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের অবস্থান

ছাত্রদল ক্যাম্পাস ছাড়লেও এখনো অবস্থান নিয়ে আছেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। ২৪ মে, টিএসসি, ঢাবি
 ছবি: প্রথম আলো।

ছাত্রদল নেতাকর্মীরা আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারে, এমন ধারণা থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় এখনো অবস্থান নিয়ে আছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা৷ তাঁদের অনেকের হাতে রয়েছে স্টাম্প ও লাঠিসোঁটা। এ ছাড়া ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীকে মোটরসাইকেলে করে পুরো ক্যাম্পাসে ‘শোডাউন’ করতে দেখা গেছে। তবে ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেছেন, তাঁরা আজ আর ক্যাম্পাসে আসবেন না।

আজ মঙ্গলবার সকালে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে আসতে গেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় তাঁদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এক পর্যায়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদের এক বক্তব্যের পর গত রোববার সন্ধ্যায় টিএসসি এলাকায় ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর ওপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করেন।

ওই ঘটনার প্রতিবাদ ও সাইফ মাহমুদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল৷ সেখানে যাওয়ার পথে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ছাত্রদলের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ৷ পরে সাড়ে ১১টার দিকে দোয়েল চত্বর ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে।

পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর ছাত্রদল ক্যাম্পাস ছাড়লেও টিএসসি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও মধুর ক্যানটিনে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা৷ এ ছাড়া মোটরসাইকেল শোডাউনও চলছে। টিএসসিতে অবস্থানে এক ছাত্রলীগ কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রদলকে প্রতিহত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। ছাত্রদল আজ আবারও ক্যাম্পাসে আসতে পারে৷ শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে আমরা অবস্থানে আছি।’

তবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, আজ তাঁরা আর ক্যাম্পাসে আসবেন না৷ তাঁদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। তবে সেটি কোথায় বা কখন, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি৷ এখন আহত নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ব্যস্ত রয়েছেন৷

এদিকে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সাংঘর্ষিক অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বছরের পর বছর ধরে সহাবস্থান চলছে। ক্যাম্পাসে কী এমন হয়েছে, জঙ্গি মনোভাব নিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য লাঠিসোঁটা হাতে ক্যাম্পাসে ঢুকতে হবে? আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বলা হয়েছে, কার কী রাজনৈতিক পরিচয় সেটি আমাদের বিবেচনার বিষয় নয়। ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে ভোরবেলা যারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কী ঘটেছে, সে বিষয়ে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছেও প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে৷ প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করব৷’