বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ যে চারটি আইন করেছে, তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কফিনে পেরেক দেওয়ার মতো।
আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতন্ত্র হত্যায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ আইন, প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভার সূচনা বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। বিএনপির উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এটা সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে বড় কয়েকটি সমস্যার একটি। সারা বিশ্বই মুক্ত গণমাধ্যমের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে, বিশেষ করে বাংলাদেশে। বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমরা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি পালন করছি, তখন অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি, গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, যাঁরা স্বাধীনভাবে লিখতে চান, মত প্রকাশ করতে চান, তা তাঁরা করতে পারছেন না।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয়গুলো তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা করতে গিয়ে তারা ধরে নিয়েছে, সবার আগে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব মনে করেন, প্রায় প্রতিটি গণমাধ্যমকে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের নজরদারি এমন পর্যায়ে গেছে, কোন সাংবাদিক কখন কার সঙ্গে কথা বলছেন, দেখা করছেন, সেটাও তারা নজরদারি করছে এবং সুবিধামতো তাঁদের কথোপকথন প্রকাশ করে দিচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মনে করেন, এখন যে আইনগুলো তৈরি করা হচ্ছে, সেটা গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। তিনি বলেন, ‘এ রাস্তা কোনো দল বা ব্যক্তির নয়, স্বাধীনতাও কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধ করি, তখন আমাদের স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন–গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করা। কিন্তু যখন দেখি সাংবাদিকেরা লিখতে পারছেন না, সম্পাদকদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তখন খুব কষ্ট লাগে, দুঃখ লাগে। বস্তুত, এর মধ্য দিয়ে সাংবাদিকদের যে সাহসিকতা, সেটাও কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
ফখরুল বলেন, ‘এ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সবারই সোচ্চার হওয়া উচিত, অন্যথায় আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দায়ী হয়ে থাকব।’
মতবিনিময় সভায় ‘মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের ক্রমাবনতির প্রেক্ষিত ও বিএনপির ভাবনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদসহ সিনিয়র সাংবাদিক ও সাংবাদিকনেতারা উপস্থিত ছিলেন।