দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হলে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করার হুমকি দিয়েছেন বিএনপি থেকে নির্বাচিত সাংসদেরা। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তাঁরা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবিতে আজ রোববার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির সাংসদেরা। মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আমাদের সংসদ থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করবেন না।’ তিনি বলেন, তাঁদের দাবি ন্যায়সংগত। এ দাবি মানা না হলে তাঁরা জাতীয় সংসদে থাকবেন কি না, সেটি চিন্তাভাবনা করবেন। হারুন বলেন , খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে সারা দেশের মানুষ উজ্জীবিত হবে, এটি জেনে সরকার তাঁকে মুক্তি দিচ্ছে না। জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে পেছন ফিরে ‘ডিকটেড’ করেছেন, তা লজ্জাকর। আর আইনমন্ত্রী যেভাবে ব্যাখ্যা দেন, তা হাস্যকর।
আরেক সাংসদ জি এম সিরাজ বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কিন্তু সরকার চিকিৎসকের কথা উপেক্ষা করছে। আইনমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে আবার জেলে গিয়ে আবেদন করতে হবে। সরকার চাইলে খালেদা জিয়ার বাসভবনকে সাবজেল ঘোষণা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিতে পারে। তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর যে শারীরিক ভাষা দেখা গেছে, তাতে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁরা কিছু আশা করেন না। রাষ্ট্রপতিকে তাঁর ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান তিনি।
সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত রুমিন ফারহানা বলেন, খালেদা জিয়াকে সরকার ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাঁর কিছু হলে দায় সরকারকেই নিতে হবে। দেশে আইনের শাসন থাকলে খালেদা জিয়া এমনিতেই জামিন পেতেন। এখনো ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে। আইনমন্ত্রী যে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা অপব্যাখ্যা।
সাংসদ মোশাররফ হোসেন বলেন, এর আগে তাঁরা সংসদে বলেছেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হলে তাঁরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন। সরকারের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে, বিএনপি সংসদে থাক বা না থাক, তাতে তাদের কিছু যায়–আসে না।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির সাংসদ আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ও আমিনুল ইসলাম মানববন্ধনে অংশ নেন। এ কর্মসূচি ঘিরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কর্মসূচি চলাকালে ফুটপাত দিয়ে মানুষের চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হয়।