বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা’ মামলায় সাজা দিয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে পরিত্যক্ত কারাগারে আটকে রেখেছে। তাঁকে সুচিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।
ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে না। গত বছরের ৯ নভেম্বর থেকে তাঁর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়নি। ২৪ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা খালেদা জিয়াকে কারাগারে গিয়ে দেখেছেন। গত তিন মাসে তাঁর (খালেদা জিয়া) রক্ত পরীক্ষা থেকে শুরু করে শারীরিক কোনো পরীক্ষাই করা হয়নি। এটি দেখে চিকিৎসকেরা অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছেন। তিনি বলেন, কারাগারে যাওয়ার সময় খালেদা জিয়া হেঁটে এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হেঁটে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এখন তিনি কারও সাহায্য ছাড়া দাঁড়াতেও পারেন না। তাঁর দুই কাঁধে ব্যথা। হাঁটুর ব্যথা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া তাঁর ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগ বেড়েছে।
চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার কিছু হলে ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়’ এই সরকারকে সব দায়দায়িত্ব নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, অবিলম্বে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বাড়তি খরচ হলে বা তাঁর চিকিৎসার সব খরচ বহন করতে বিএনপি রাজি বলেও মির্জা ফখরুল মন্তব্য করেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে দেখছি যে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর যে অসুখ, তা অত্যন্ত মারাত্মক। তাঁর নিয়মিত সুচিকিৎসা প্রয়োজন। এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। খালেদা জিয়া কোনো সরকারের কাছ থেকেই এ ধরনের আচরণ পেতে পারেন না।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, চার মাস ধরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর আত্মীয়, আইনজীবী ও দলীয় নেতাদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আগে সপ্তাহ পরপর স্বজনদের দেখা করতে দিলেও, তা এখন সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। সরকার পরিকল্পিতভাবে তাঁকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে একটার পর একটা ‘ষড়যন্ত্র’ কাজ করে যাচ্ছে। জামিন পাওয়ার পরও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান ফখরুল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।