আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশে এই প্রথম শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো। তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং বাধ্যতামূলক পদত্যাগ করানো হয়েছে। বাংলাদেশের অন্য কোনো ছাত্রসংগঠনে এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের নজির নেই।
আজ রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভূলতা ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
আজ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। যে অন্যায় করবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই ছাত্রলীগের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও দেখভাল করছেন। ছাত্রলীগের পরবর্তী সম্মেলন সম্পন্ন করতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন। তাঁরা ভবিষ্যতে একটি সুষ্ঠু–সুন্দর সম্মেলন করার জন্য প্রস্তুতি নেবেন।
জাতীয় সম্মেলন করতে আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের কিছু জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের সম্মেলন বাকি আছে। এই সময়ের মধ্যে এসব সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে। আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ১৭৫ জন প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই নোটিশের জবাব পাওয়া পর বিদ্রোহী প্রার্থীদের যাঁরা মদদ দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁদেরও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূলতা ফ্লাইওভার উদ্বোধন করবেন জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ৩৭৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ভূলতা চার লেনবিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য এবং যানজট নিরসনে ফ্লাইওভারটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চার লেনের কাজের ফিজিবিলিটি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। অচিরেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চার লেনে রূপান্তরের কাজ শুরু করা হবে। এই সড়কের চার লেনের কাজ সম্পন্ন হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট থাকবে না।
আজ সেতুমন্ত্রীর এই পরিদর্শনের সময় সঙ্গে ছিলেন ভূলতা ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক গোলাম হায়দার রিয়াজ, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম প্রমুখ।