একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাম গণতান্ত্রিক জোট দেড় শর বেশি আসনে প্রার্থী দেবে বলে একমত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) তাদের নির্বাচনী প্রতীক কাস্তে নিয়ে লড়তে চায় ৮৩ আসনে।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গত শনিবার বিকেলে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বাছাই কমিটিতে এসব প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিটির একাধিক সূত্র জানায়, সিপিবি তাদের ৮৩ প্রার্থী চূড়ান্ত করার কথা জানিয়েছে। জোটভুক্ত অন্য দলগুলো আসনের সংখ্যার বিষয়ে জানিয়েছে। তবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা না দেওয়ায় জোটের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।
বৈঠকের সূত্র জানায়, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (খালেকুজ্জামান) ৫০ থেকে ৫৫টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছে। এ ছাড়া বাসদ (মার্ক্সবাদী) ৮ থেকে ১০ জন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ১০ থেকে ১৫টি, গণসংহতি আন্দোলন ৩টি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ৪ থেকে ৫টি, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ ২টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন ১টি আসনে প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছে। এর মধ্যে ১২০ আসনে একক প্রার্থী, অন্যগুলোয় একাধিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা রয়ে গেছেন।
সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রথম আলোকে বলেন, বাম গণতান্ত্রিক জোট থেকে ২০০ আসনের প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আজ সভায় যাচাই-বাছাই শেষে দেড় শর কিছু বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১১৫ থেকে ১২০ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাকিগুলোতেও একক প্রার্থীর বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। তবে সিপিবি নিজেদের ৮৩ জন প্রার্থী চূড়ান্তের কথা জানিয়েছে।
সিপিবির নির্বাচনী স্লোগান ‘ভিশন মুক্তিযুদ্ধ ৭১’। দলের প্রার্থীদের বেশির ভাগই দলের স্থানীয় ও অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতা। কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি বড় অংশই এবার নির্বাচন থেকে দূরে আছেন।
রংপুর বিভাগে সিপিবির প্রার্থীরা হলেন পঞ্চগড়-২-এ (দেবীগঞ্জ, বোদা) আশরাফুল আলম, ঠাকুরগাঁও (পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল) প্রভাত সমীর শাজাহান আলম, দিনাজপুর-৩ (সদর) বদিউজ্জামান বাদল, দিনাজপুর-৪ (খানসামা, চিরিরবন্দর) রিয়াজুল ইসলাম রাজু, রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) অধ্যাপক কামরুজ্জামান, কুড়িগ্রাম-২ (সদর, রাজারহাট, ফুলবাড়ী) উপেন্দ্রনাথ, কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর, চিলমারী) দেলোয়ার হোসেন, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) নূরে আলম মানিক, গাইবান্ধা-২ (সদর) মিহির ঘোষ ও গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা, ফুলছড়ি) যজ্ঞেশ্বর বর্মণ। এঁদের মধ্যে মিহির ঘোষ কেন্দ্রীয় নেতা, বাকিরা সবাই স্থানীয়।
রাজশাহী বিভাগে বগুড়া-৫ (শেরপুর, ধুনট) আসনে সন্তোষ পাল, বগুড়া-৬ (সদর) আমিনুল ফরিদ, নওগাঁ-৪ (মান্দা) ডা. ফজলুর রহমান, নওগাঁ-৬ (রানীনগর, আত্রাই) মনসুর রহমান, রাজশাহী-২ (সিটি) এনামুল হক, সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ, তাড়াশ) মোস্তফা নূরুল আমিন প্রার্থী হবেন। এঁদের মধ্যে আমিনুল ফরিদ ও ফজলুর রহমান সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
খুলনা বিভাগে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর, ভেড়ামারা) অধ্যাপক অহিদুজ্জামান পিন্টু, ঝিনাইদহ-৪ (কালিগঞ্জ, সদর) ফণীভূষণ রায়, মাগুরা-১ (শ্রীপুর, সদর) আনিসুর রহমান, বাগেরহাট-২ (সদর, কচুয়া) খান সেকেন্দার আলী, বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা) শরীফুজ্জামান শরীফ, খুলনা-১ (দাকোপ, বটিয়াঘাটা) অশোক সরকার, খুলনা-২ (সদর, সোনাডাঙ্গা) এইচ এম শাহাদাত, খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া, ফুলতলা, খানজাহান আলী) চিত্ত গোলদার এবং খুলনা-৬ (কয়রা, পাইকগাছা) আসনে সুভাষ ছানা মহিম।
বরিশাল বিভাগে দলের প্রার্থীদের মধ্যে আছেন পটুয়াখালী-১ (সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকি) আসনে মোতালেব মোল্লা, পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে শাহাবুদ্দিন মাস্টার, ভোলা-১ (সদর) আসনে অ্যাড. সোহেল আহমেদ, পিরোজপুর-১ (সদর, নাজিরপুর, নেছারাবাদ) ডা. তপন বসু, পিরোজপুর-২ (ভান্ডারিয়া, কাউখালী, জিয়ানগর) হাজী হামিদ এবং পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) দিলীপ পাইক।
ময়মনসিংহ বিভাগে জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনে মনজুরুল আহসান খান, জামালপুর-৩ (মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ) শিবলুল বারী রাজু, জামালপুর-৫ (সদর) আলী আক্কাস, শেরপুর-১ (সদর) আফিল শেখ, ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া) আসনে আব্দুর রেজ্জাক, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) হারুন আল বারী, ময়মনসিংহ-৪ (সদর) অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাত, নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা, দুর্গাপুর) ডা. দিবালোক সিংহ, নেত্রকোনা-২ (সদর, বারহাট্টা) মোশতাক আহমেদ, নেত্রকোনা-৩ (আটপাড়া, কেন্দুয়া) অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন এবং নেত্রকোনা-৪ (মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী, মদন) আসনে জলি তালুকদার।
ঢাকা জেলার ঢাকা-১ (দোহার, নবাবগঞ্জ) আসনে আবিদ হোসেন, ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, সাভার, দক্ষিণের ৫৫-৫৭ নং ওয়ার্ড) সুকান্ত শফী চৌধুরী কমল, ঢাকা-৬ (দক্ষিণের ৩৭-৪৬ নং ওয়ার্ড) আবু তাহের বকুল, ঢাকা-১৩ (উত্তরের ২৮-৩৪ নং ওয়ার্ড) আসনে আহসান হাবিব লাবলু, ঢাকা-১৪ (উত্তরের ৭-১২ নং ওয়ার্ড) রিয়াজউদ্দিন, ঢাকা-১৫ (উত্তরের ৪, ১৩-১৬ নং ওয়ার্ড) ডা. সাজেদুল হক রুবেল, ঢাকা-১৯ (সাভার) আসনে লীনা চক্রবর্তী নির্বাচন করতে চান।
ঢাকা বিভাগের অন্য জেলাগুলোর মধ্যে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর, ভূঞাপুর) আসনে জাহিদ হোসেন খান, কিশোরগঞ্জ-১ (সদর, হোসেনপুর) আসনে অ্যাডভোকেট এনামুল হক, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী, পাকুন্দিয়া) আসনে নূরুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল, করিমগঞ্জ) আসনে ডা. এনামুল হক ইদ্রিস, কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী, বাজিতপুর) আসনে অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ, মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর, হরিরামপুর, সদর) আসনে নাসিরউদ্দিন, মুন্সীগঞ্জ-১ (শ্রীনগর, সিরাজদিখান) আসনে সমর দত্ত, মুন্সীগঞ্জ-৩ (গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ) শ ম কামাল হোসেন, গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর, ১-১৮ নং ওয়ার্ড) আসনে মো. হানিফ মাহমুদ, গাজীপুর-২ (৩৫টি ওয়ার্ড) জিয়াউল কবীর খোকন, গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) মানবেন্দ্র দেব, নরসিংদী-৪ (মনোহরদী, বেলাবো) কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) মো. মনিরুজ্জামান চন্দন, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) হাফিজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আবদুস সালাম বাবুল, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে ইকবাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর, বন্দর) আসনে অ্যাডভোকেট মণ্টু ঘোষ, ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা, সালথা, সদরপুর) আসনে হাফিজুর রহমান, ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে রফিকুজ্জামান লায়েক, ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন, সদরপুর) আতাউর রহমান কালু, শরীয়তপুর-৩ (গোসাইরহাট, ডামুড্যা, ভেদরগঞ্জ) আসনে সুশান্ত ভাওয়াল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
সিলেট বিভাগে সুনামগঞ্জ-২ আসনে (দিরাই, শাল্লা) নিরঞ্জন দাশ খোকন ও হবিগঞ্জ-৩ (সদর, লাখাই) আসনে পীযূষ চক্রবর্তী নির্বাচন করবেন।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ, সরাইল) আসনে ঈশা খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর, বিজয়নগর) আসনে শাহরিয়ার মো. ফিরোজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) শাহীন খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর) অ্যাড. সৈয়দ মোহাম্মদ জামাল, কুমিল্লা-৫ (ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং) আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) মজিবুল হক, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী, সিটির ৩-৭ নং ওয়ার্ড) আসনে সেহাব উদ্দিন সাইফু, চট্টগ্রাম-৯ (সিটির ১৫-২৩, ৩১-৩৫ নং ওয়ার্ড) আসনে মৃণাল চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ, সাতকানিয়া) আসনে আব্দুল নবী, কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার, রামু) আসনে দীপক বড়ুয়া এবং নোয়াখালী-৬ আসনে মো. মঈনুদ্দিন লেনিন সিপিবি থেকে নির্বাচন করতে পারেন।