যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরামের বৃহৎ ঐক্য প্রক্রিয়ায় বিএনপিসহ আরও কিছু দলের অংশগ্রহণ এখনো চূড়ান্ত রূপ পায়নি। তবে আজ সমাবেশে বিএনপির নেতারা বলেছেন, ঐক্য তাঁরা চান। তবে কোনো কোনো নেতা এ–ও বলেছেন, ঐক্য না হলে বিএনপি একাই মাঠে থাকবে।
আজ রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলা ২টায় বিএনপি জনসভার করে। সেখানে ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে নেতারা নানা মন্তব্য করেন।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। গণতান্ত্রিক শক্তি ও রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। কারাগারে যাওয়ার আগেই খালেদা জিয়া গণতন্ত্র রক্ষায় জাতীয় ঐক্যের কথা বলে গিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘সেই লক্ষ্যেই আমাদের দাবি দাওয়াগুলো উত্থাপন করছি।’ পরে তিনি ৭ দফা দাবি ও ক্ষমতায় গেলে তাদের ১২টি লক্ষ্যের কথা ঘোষণা করেন।
প্রধান বক্তা হিসেবে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবীসহ জনগণের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আশা প্রকাশ করেন, মহাসচিবের ঘোষিত দাবি ও কর্মসূচির ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য গঠন হবে। এবং সেভাবেই রাজপথে থাকবেন তাঁরা।
জাতীয় ঐক্য যাতে না হয়, সে জন্য সরকার সব ধরনের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘ঐক্য হলে ভালো। না হলে ক্ষতি নেই। বিএনপি একাই আন্দোলন চালিয়ে যাবে।’
ঐক্য নিয়ে মানুষের আকাঙ্ক্ষা আছে উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিএনপি ঐক্যের জন্য সব সময় প্রস্তুত। বিএনপির এ আন্তরিকতাকে দুর্বলতা ভাববেন না।’ ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত বাকি দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘লোক নাই, জন নাই, বিএনপির ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন না। চাপ সৃষ্টি কর অনৈক্যের সুর পাকালে জনগণের কাছে ধীক্কৃত হবেন।’ গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াই করবে বিএনপি তাদের না করবে না বলেও জানান।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ঐক্য প্রক্রিয়ায় থাকা দলগুলোর মধ্যে বিএনপিকে তালগাছ ও অন্যদের কলাগাছ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। কিন্তু বিএনপি হচ্ছে তালগাছ, বজ্রপাত হলে তালগাছ তা আটকায়। কিন্তু কলাগাছ দিয়ে বজ্রপাত ঠেকানো যাবে না। তালগাছ তালগাছই। ওসব কলাগাছ নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই।’
বিএনপির আজকের জনভার প্রধান অতিথি রাখা হয় দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। তিনি কারাবন্দী থাকায় প্রধান অতিথির চেয়ারটি ফাঁকা রেখেই সমাবেশ করা হয়। প্রধান বক্তা দলটির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর এতে সভাপতির ভাষণ দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘মাদার অব ডেমোক্রেসি খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থাকা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ সংসদ নির্বাচনের’ দাবিতে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারবিরোধী একটি বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিএনপি এই জনসভা করছে।
ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে বিএনপির মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকলেও বিএনপির সমাবেশে অন্য কোনো দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এই জনসভা বিএনপি একাই করেছে।
আরও পড়ুন...