আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে আওয়ামী লীগ বিচলিত নয়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আজ শনিবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা গত ১০ বছরে আন্দোলন করতে পারেনি, যাদের শুরুর আগেই দুই উইকেট পড়ে গেছে। আরও কত উইকেট পড়বে, তা সময় বলে দেবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সিলেটে মাজার জিয়ারত করতে যেতে পারেন। সংসদ নির্বাচনের আগে সিলেটে মাজার জিয়ারত করার একটা ট্র্যাডিশন (ঐতিহ্য) রয়েছে। কিন্তু মাজার জিয়ারতের নামে যদি কোনো নাশকতা, সহিংসতার পরিকল্পনা নিয়ে তাঁরা সেখানে যান, তা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নির্ধারণ করে দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে।
ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলেই বিদেশিদের নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট বসেছে। ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে তারা প্রথমেই বিদেশিদের কাছে গেছে, দেশের জনগণের কাছে তো যায়নি। দেশের জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা নেই, জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
সাংবাদিকের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সচিব বলেছেন নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। তাহলে এখন আর ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে কে, কার সঙ্গে সংলাপ করবে? দেশে সংলাপ করার মতো এমন কোনো পরিবেশ নেই, এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি, সংলাপের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।’
নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা ও সম্মিলিত জোট থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের ঘোষণা সম্পর্কে মন্ত্রী কাদের বলেন, ‘এরশাদ সাহেব তো পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে বক্তব্য রাখতে পারেন। তিনি তো সংসদে বিরোধী দলের আসনে আছেন, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে যেকোনো বক্তব্য উনি দিতেই পারেন। উনি তো আর ওনার পার্টিকে আওয়ামী লীগে দিয়ে দেননি। এরশাদ সাহেব আমাদের সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচন করতে পারেন, আবার না–ও করতে পারেন। আগামী ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে সবই স্পষ্ট হয়ে যাবে।’
বিকল্পধারার ভাঙন ও বিএনপি ভাঙতে পারে কি না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘ভাঙনের প্রক্রিয়ায় আমাদের অংশ নেওয়ার কিছু নেই। অন্য দল যদি ভাঙে, তাহলে তারা নিজেরাই নিজেদের দল ভাঙবে। সেখানে আমাদের তো কোনো হাত নেই।’
নারী সাংবাদিকদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটি টেলিভিশন টক শোতে প্রখ্যাত নারী সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে এক-এগারোর কুশীলব, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মঈনুল হোসেন যে অশালীন, অশোভন আচরণ করেছেন, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। যে ভাষায় তিনি কথা বলেছেন, তা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা নারী সাংবাদিকদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করছি।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মণি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।