বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘নিরাপদ সড়কের আন্দোলন দেশের মানুষ দেখেছে। সে আন্দোলনে মানুষের তীব্র ক্ষোভ দেখেছি। এখন আন্দোলন হবে নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার। নিরাপদ ভোটকেন্দ্র এবং নিরাপদ পুলিশের জন্য দেশে এখন আন্দোলন হবে।’
শনিবার চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি আয়োজিত শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম স্মরণে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন চত্বরে এ শোকসভার আয়োজন করে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যাঁরা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী, তাঁরা আজ ঐক্যবদ্ধ। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে যে রাজনৈতিক দল ঐক্য প্রক্রিয়ায় থাকবে না, তাদের জাতির কাছে জবাব দিতে হবে।
সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইভিএমের মাধ্যমে তারা ভোট করতে চায়। ভোটের আগের রাতে তারা সিল মেরে ব্যালট পেপার বাক্সে ঢুকাতে চায়। কিন্তু দেশে ইভিএমে কোনো ভোট হবে না। রাতে সিল মেরে বাক্সে ব্যালট ঢুকানো যাবে না। কারণ, বিএনপিও প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপির শক্তি জনগণ। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে জনগণ কোনো ভোট হতে দেবে না।
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে শোকসভার প্রধান বক্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু বলেন, কয়েক মাসের মধ্যে সরকার হটিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র এবং বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা হবে। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে।
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ‘সরকার বলছে দেশে তাদের সমর্থন নাকি ৬৮-৭০ শতাংশ। এতই যদি সমর্থক থাকে তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে বাধা কোথায়? আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমরা সরকারের পতন চাই না। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে কেবল সরকার বদল চাই।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বন্দুকের জোরে বিচারব্যবস্থা পরিচালিত করছে সরকার। এস কে সিনহার বই থেকে এ সত্য আজ বেরিয়ে এসেছে। মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। কবরে মৃত লোকজনকে মামলার আসামি করা হচ্ছে। দেশে যে অবস্থা চলছে তাতে পুলিশের উচিত কবরস্থানও পাহারা দেওয়া। নইলে কবরের লোকজন কী করে “সন্ত্রাসী” ঘটনা ঘটায়!’
নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলছে। গায়ের জোরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলে রেখেছে আওয়ামী লীগ। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে তারা আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু ২০১৪ ও ২০১৮ সাল এক নয়। দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’
শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ফজলুল হক, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মামুন মিয়া, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মো. নাজিম উদ্দীন, প্রয়াত সৈয়দ ওয়াহিদের জ্যেষ্ঠ মেয়ে শাকিলা ফারজানা প্রমুখ।