প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছি। ইনশা আল্লাহ দুই সিটিতে আমাদের প্রার্থীরা জয়ী হবে।’ আজ শনিবার সকালে রাজধানীর সিটি কলেজে ভোট দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আজ দুই সিটিতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হচ্ছে। ভোট দেওয়ার পর এই ভোটদান প্রক্রিয়া সবিস্তারে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিলাম। খুব অল্প সময়ে সহজেই ভোট দিতে পেরেছি। ভোটের বুথে পুরো মেশিন দেখানো হলো সব দলের এজেন্টদের সামনে। দেখা গেল এটি ফাঁকা। আমার আইডি কার্ড দেখল। এরপর আমাকে ভোট দিতে দেওয়া হলো। প্রধানমন্ত্রী দুই সিটির ভোটারদের সুশৃঙ্খলভাবে, নির্ভয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আহ্বান জানান।’
ইভিএম নিয়ে বিএনপির শঙ্কা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শেখ হাসিনা বলেন, ইভিএম হলো ডিজিটাল পদ্ধতি। এখানে ভোট জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি এসব নিয়ে আপত্তি করতে পারে। বিএনপির চরিত্রই এমন। এ দেশে ভোট চুরি শুরু করেছে তারা। কিন্তু ইভিএমে চুরির কোনো সুযোগ নেই। সে জন্যই তাদের আপত্তি।
ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ আজ সকাল আটটায় শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেখানে ভোট দিয়েছেন, সেই সিটি কলেজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মধ্যে পড়েছে। আজ সকাল আটটার কিছু আগেই প্রধানমন্ত্রী সেখানে যান। অপেক্ষা করেন। আটটার সময় তিনি প্রথম ওই বুথে নিজের ভোট দেন। এরপর তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত ছিলেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তাপসসহ আওয়ামী লীগের মনোনীত কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট দিয়েছি। আশা করি, দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হবে ইনশা আল্লাহ।’
শেখ হাসিনা বলেন, সবার প্রতি আহ্বান জানাই, নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন। আমার ভোট আমি দেব, যাকে পছন্দ তাকে দেব। সুশৃঙ্খলভাবে, নির্ভয়ে ভোট দিন। কেউ যেন ভোটের দিন কোনো রকম গন্ডগোল করতে না পারে। প্রত্যেকেই নিজের ভোট দিতে পারে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা গণতান্ত্রিক অধিকার পেয়েছি। আজ আমরা উন্নয়নের এক মহাসড়কে উঠতে পেরেছি। ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশ জাতির পিতার সোনার বাংলায় পরিণত হবে। বাংলাদেশকে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।’
বিভিন্ন দূতাবাস ও বিদেশি মিশনের পর্যবেক্ষকের তালিকায় ওই সব দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশিদের নাম দেওয়ার ঘটনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এর কঠোর সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিভিন্ন দূতাবাসে বাংলাদেশি যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তাঁরা অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছেন। বিদেশি পর্যবেক্ষক বিদেশি হতে হবে। এটা তাঁরা ঠিক করেননি। যাঁরা দূতাবাসের বাংলাদেশ কর্মকর্তা, তাঁরা নিজেদের ভোট দিন, কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু তাঁরা কীভাবে বিদেশি পর্যবেক্ষক হবেন?
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশি চাকরিজীবীদের মধ্যে অনেক ধরনের বৈরী লোকও আছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের আত্মীয়, জাতির পিতা হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আত্মীয়স্বজন আছে। যুদ্ধাপরাধীদের উত্তরসূরি আছে এদের মধ্যে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন তাঁর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুধা সদনের ঠিকানার ভোটার। তিনি ২৭০ নম্বর কেন্দ্রে (ঢাকা সিটি কলেজে) চার নম্বর বিল্ডিংয়ে দ্বিতীয় তলায় তিন নম্বর নারী বুথে ভোট দিয়েছেন।