এখন নির্বাচন হলে ৩৪ শতাংশ মানুষ নিশ্চিত নন কাকে ভোট দেবেন। আর ১১ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা ছাত্র–সমর্থিত নতুন কোনো দলকে ভোট চান। এই উত্তর পাওয়া গেছে মাঠপর্যায়ের জরিপ থেকে। অন্যদিকে অনলাইন জরিপে অংশ নেওয়া ৩৫ শতাংশই ছাত্র–সমর্থিত নতুন কোনো রাজনৈতিক দলকে ভোট দিতে চান। তবে ১১ শতাংশ এখনো নিশ্চিত নন কাকে ভোট দেবেন।
উন্নয়ন গবেষণা ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংস্থা ইনোভিশন কনসাল্টিং বাংলাদেশ পরিচালিত জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। তাদের বাংলাদেশ স্পিকস নামের একটি মাইক্রো-পোলিং প্ল্যাটফর্মে ২৯ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে ও অনলাইনে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। দেশের ৫০টি জেলায় মাঠ পর্যায়ে ৫ হাজার ১১৫ নমুনা এবং অনলাইনে ৬৪টি জেলায় ৩ হাজার ৫৮১ নমুনার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এ জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয়। ইনোভিশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবাইয়াৎ সরওয়ার জরিপের বিস্তারিত ফলাফল তুলে ধরেন। এ সময় বলা হয়, দুই জরিপেই মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো পিছিয়ে আছে। বিশেষ করে অনলাইন জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রত্যাখ্যান করার প্রবলতা স্পষ্ট।
মো. রুবাইয়াৎ সরওয়ার ফলাফল তুলে ধরে বলেন, মাঠপর্যায়ের জরিপে দেখা গেছে বিএনপির সমর্থন বেশি, এর হার ২১ শতাংশ। এর পরে আছে জামায়াতে ইসলামী—১৪ শতাংশ। আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন এমন কথা বলেছেন ৫ শতাংশ। আর ৩৪ শতাংশ, অর্থাৎ বেশির ভাগই নিশ্চিত নন কাকে ভোট দেবেন।
অন্যদিকে অনলাইন জরিপের ফল বলছে, ৩৫ শতাংশই ছাত্র–সমর্থিত নতুন কোনো রাজনৈতিক দলকে, জামায়াতকে ২৫ শতাংশ, আওয়ামী লীগকে ১০ শতাংশ এবং বিএনপিকেও ১০ শতাংশ ভোট দিতে চান।
জরিপের ফলাফলে বলা হয়, আর মাঠপর্যায়ে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জেন-জি (১৯৯৭ থেকে ২০১২ জন্মসাল) প্রজন্মের ৩০ শতাংশ নিশ্চিত নন কাকে ভোট দেবেন। অন্যদিকে অনলাইন জরিপে এই বয়সীদের ৩৭ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা ছাত্র–সমর্থিত কোনো দলকে বেছে নেবেন।
জরিপ অনুযায়ী, স্বল্প আয়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও অনলাইনে সক্রিয় নন এমন বয়সভিত্তিক, লিঙ্গভিত্তিক, ও পেশাভিত্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই এখনো নিশ্চিত নন যে তাঁরা কাকে ভোট দেবেন। মাঠ জরিপ অনুযায়ী, কৃষক ও শ্রমিক এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিএনপির সমর্থন বেশি। কিন্তু শিক্ষার্থী ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন কাছাকাছি। আবার অনলাইনে শিক্ষার্থী, বেকার ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে জামায়াত এগিয়ে।
জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী, বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর প্রমুখ।