দিনাজপুর জেলা যুবলীগ

এক কমিটিতেই যুগ পার কার্যক্রম স্থবির

দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সর্বশেষ ২০০৫ সালের ১৪ জুনের সম্মেলনে তিন বছর মেয়াদি কমিটি হয়। এরপর এক যুগ পেরিয়ে গেলেও আর কোনো সম্মেলন বা কমিটি হয়নি। এতে দলীয় কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

যুবলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্র সময় না দেওয়ায় দীর্ঘ নয় বছরেও সম্মেলন হয়নি, গঠন করা হয়নি নতুন কমিটি।

জেলা যুবলীগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে ৭১ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। বর্তমান কমিটির মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট কপিলেশ্বর বসাকসহ নয়জন আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। সহসম্পাদক খলিলুল্লাহ আজাদসহ ছয়জন বিদেশে গেছেন। এ ছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু মুছাসহ পাঁচজন মারা গেছেন। এরপরও দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন ও নতুন কমিটি গঠন না হওয়ায় দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। নেতা-কর্মীদের অনেকেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন (৫২) বলেন, সম্মেলন না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ শূন্যপদগুলো পূরণ করা যাচ্ছে না। এতে অনেক নেতা-কর্মী উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. রবিউল হাসান বলেন, এ বছর ১৪ জানুয়ারি বর্ধিত সভা হয়। সেখানে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান ভুইয়া ও সাংগঠনিকসম্পাদক এমরান হোসেন খান ২৭ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সম্মেলনের কোনো খবর নেই।

জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জাকির হোসেন (৪৮) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগের ‘ভ্যানগার্ড’ যুবলীগ। জেলা যুবলীগের কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় দলটি সাংগঠনিক শৃঙ্খলা হারিয়েছে। দল ক্ষমতায় থাকার পরও দায়সারাভাবে পালিত হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বহুদিন ধরে বিভিন্ন উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটিও গঠন করতে না পারায় অনেকেই ভুলে গেছেন তাঁরা সদস্য রয়েছেন কি না। এ বিষয়ে রংপুর বিভাগের দায়িত্বে থাকা বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরানকে অনেকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি ব্যবস্থা নেননি। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা না হলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রথম আলোকে বলেন, নতুন কমিটি না হওয়ায় জেলার অনেক উপজেলার কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও নতুন কমিটি গঠন করা যাচ্ছে না। দেখা দিচ্ছে বিরোধ, শুরু হচ্ছে কোন্দল।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, সম্মেলনের জন্য তাঁরা প্রস্তুত। কেন্দ্রীয় কমিটি সময় নির্ধারণ না করায় সম্মেলন হচ্ছে না। জেলা যুবলীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, সম্মেলন না হলেও দল গতিশীল। জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১১টিতেপূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে। দল ক্ষমতায় থাকার পরও জেলা যুবলীগের বিরুদ্ধে দলবাজি, দখলবাজি বা টেন্ডারবাজির কোনো অভিযোগ নেই।