একাত্তর প্রশ্নে প্রকাশ্যে জামায়াতে মতবিরোধ

>

• পদত্যাগের পর আবদুর রাজ্জাক নতুন দল করবেন?
• দলের ভেতরে–বাইরে কৌতুহল
• জামায়াতের ভেতরে কট্টর ও মধ্যপন্থী অংশের বিরোধ

মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং জামায়াত বিলুপ্তির প্রশ্নে দলের ভেতরে নতুন করে যে আলোচনা উঠেছে, তা নতুন মাত্রা পেয়েছে। এর রেশ ধরে গতকাল শুক্রবার দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও বিশিষ্ট আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক পদত্যাগ করেছেন। যুক্তরাজ্যে থেকে তি​নি জামায়াতের আমিরের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান।

অতীতে জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরে কয়েকবার ভাঙন ও বিদ্রোহের ঘটনা ঘটলেও এই প্রথম জামায়াতের উচ্চপর্যায়ের কোনো নেতা সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে পদত্যাগ করলেন। একই সঙ্গে তা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে পাঠানো হয়।

জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান নেতৃত্বের মধ্যে আবদুর রাজ্জাক একজন দক্ষ ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে পরিচিত। পদত্যাগের পর তিনি নতুন নামে দল করছেন কি না, তা নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। যদিও জামায়াত গতকাল এক বিবৃতিতে আবদুর রাজ্জাকের পদত্যাগে ‘ব্যথিত’ ও ‘মর্মাহত’ বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

আবদুর রাজ্জাক পদত্যাগপত্রের শেষ দিকে লেখেন, ‘এখন থেকে আমি নিজস্ব পেশায় আত্মনিয়োগ করতে চাই। সেই সঙ্গে ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধিশালী ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করব।’

অবশ্য এ বিষয়ে আবদুর রাজ্জাক গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে দেশের সেবায় কাজ করে যাব। নতুন দল করার ব্যাপারে কোনো চিন্তা করছি না।’

দলের উচ্চপর্যায়ের সূত্রগুলো জানায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেওয়া, নতুন নামে দল গঠন করাসহ আরও কিছু কর্মপন্থা নিয়ে জামায়াতের ভেতরে একটি অংশ সক্রিয় হয়। মধ্যপন্থী হিসেবে পরিচিত এই অংশের বিরুদ্ধে তৎপর আছে কট্টরপন্থী অংশও। এ নিয়ে দলটির ভেতরে দুটি ধারার সৃষ্টি হয়েছে।

দলটির একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, মধ্যপন্থী অংশটি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার কারণে ঐতিহাসিক লজ্জা থেকে মুক্ত হতে চায়। তাদের অন্যতম ছিলেন আবদুর রাজ্জাক। যদিও দলের ভেতরে মধ্যপন্থা বা উদার নীতিকৌশল গ্রহণে আগ্রহী এই অংশের বেশির ভাগ অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং একাত্তরের পরের প্রজন্ম। তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের প্রতি মানুষের আবেগ, মানবতাবিরোধী অপরাধে নেতাদের সাজা ও ইসলামপন্থী রাজনীতির বিশ্ব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে দলের নাম পরিবর্তন করে আধুনিক ধাঁচের দল গড়ার পক্ষে। কারাগারে যাওয়ার আগে পর্যন্ত এ চিন্তার পক্ষে সক্রিয় ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলী। কামারুজ্জামান কারাগার থেকেও এর পক্ষে চিঠি লিখেছেন।

আবদুর রাজ্জাক

গতকাল পদত্যাগপত্রে আবদুর রাজ্জাক এ বিষয়ে তাঁর প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, ‘সর্বশেষ গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর জানুয়ারি মাসে জামায়াতের করণীয় সম্পর্কে আমার মতামত চাওয়া হয়। আমি যুদ্ধকালীন জামায়াতের ভূমিকা সম্পর্কে দায়দায়িত্ব গ্রহণ করে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিই। অন্য কোনো বিকল্প না পেয়ে বলেছিলাম, জামায়াত বিলুপ্ত করে দিন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আমার তিন দশকের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।’

পদত্যাগের জন্য আবদুর রাজ্জাক সুনির্দিষ্ট করে দুটি কারণ উল্লেখ করেন। তিনি মনে করেন, জামায়াত ’৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চায়নি। একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতার আলোকে এবং অন্যান্য মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনকে বিবেচনায় এনে নিজেদের সংস্কার করতে পারেনি।

রাজ্জাক পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন, গত প্রায় দুই দশক তিনি জামায়াতকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকা ও পাকিস্তান সমর্থনের কারণ উল্লেখ করে জাতির কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় বিশ্বাস করেছি এবং এখনো করি যে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে নেতিবাচক ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া শুধু নৈতিক দায়িত্বই নয়, বরং তৎপরবর্তী প্রজন্মকে দায়মুক্ত করার জন্য অত্যন্ত জরুরি কর্তব্য।’

এ বিষয়ে জামায়াতের রাজনীতির অন্যতম চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব ও সাবেক সচিব শাহ আবদুল হান্নান গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে গোলাম আযম বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ১৫ বছর আগে পাবলিক মিটিংয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। আবার দরকার হলে দল ক্ষমা চাইবে।

আর দল বিলুপ্তির বিষয়ে শাহ আবদুল হান্নান দাবি করেন, ‘জামায়াত জনগণের কাছে কোনো সমস্যা নয়। সমস্যা পলিটিক্যাল এলিমেন্টসের কাছে। তিনি যতটুকু জানেন, জামায়াত রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসবে। তারা দাওয়াতি কার্যক্রম এবং সমাজসেবার মনোনিবেশ করবে। তাই নতুন দল করার কাজ কী?’

বিষয়ে আবদুর রাজ্জাক বলেন, শাহ আবদুল হান্নানের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে তিনি শ্রদ্ধাশীল। তবে তাঁর যা মত তা তিনি পরিষ্কার করে পদত্যাগপত্রে বলেছেন।

জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের সূত্র জানায়, আবদুর রাজ্জাক মূলত একাত্তরের বিষয়টি সামনে এনে পদত্যাগ করলেও এর নেপথ্যে আছে দলের নেতৃত্ব, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কর্মপন্থা নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে আসা মতবিরোধ। যাঁরা দলের নীতি-কৌশল নিয়ে স্বাধীন মত প্রকাশ করেন, তাঁদের দলে কোণঠাসা করে রাখা হয় এবং আড়চোখে দেখা হয়। আবদুর রাজ্জাকসহ এ ধারার অনেক নেতাকে নানা অজুহাতে নেতৃত্বের বাইরে অথবা গুরুত্বহীন করে রাখার অভিযোগ রয়েছে।

২০১০ সালে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদসহ শীর্ষ নেতাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ছিলেন আবদুর রাজ্জাক। পদত্যাগপত্রে এর উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, জামায়াত নেতাদের মামলা তিনি ‘সততা ও একাগ্রতার সঙ্গেই’ পরিচালনা করেছেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে তিনি যুক্তরাজ্যে আছেন।

আবদুর রাজ্জাক মনে করেন, একাত্তরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের উপলব্ধি ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে দাঁড়িয়ে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। তিনি লিখেছেন, যেকোনো রাজনৈতিক দল, ইতিহাসের কোনো এক পর্বে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ত্রুটি-বিচ্যুতির শিকার হতে পারে। কিন্তু তাকে ক্রমাগত অস্বীকার করে, সেই সিদ্ধান্ত ও তার ফলাফল মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অনড় অবস্থান বজায় রাখা শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয় বরং আত্মঘাতী রাজনীতি। তা কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।

এ প্রসঙ্গে রাজ্জাক আরও লেখেন, একাত্তরের ভূমিকার জন্য গ্রহণযোগ্য বক্তব্য প্রদানের ব্যর্থতা এবং ক্ষমা না চাওয়ার দায়ভার এখন তাদেরও নিতে হচ্ছে, যারা তখন ওই সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত ছিল না, এমনকি যাদের তখন জন্মও হয়নি। এই ক্রমাগত ব্যর্থতা জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী দল হিসেবে আখ্যায়িত করার ক্ষেত্রে প্রধান নিয়ামকের ভূমিকা পালন করছে। ফলে জামায়াত জনগণ, গণরাজনীতি এবং দেশবিমুখ দলে পরিণত হয়েছে। পদত্যাগপত্রে রাজ্জাক ২০০১ সালে, ২০০৫ সালে, ২০০৭–২০০৮ ও ২০১১ সালে দলীয় ফোরামে এবং ২০১৬ সালের মার্চে বর্তমান আমির মকবুল আহমাদকে এ বিষয়ে লেখার কথা উল্লেখ করেন।

রাজ্জাক উল্লেখ করেন, ১৯৮৬ সালে জামায়াতে যোগ দেওয়ার পর দলের কাঠামোগত সংস্কার, নারীর কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং জামায়াতের উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা ও কর্মসূচিতে আমূল পরিবর্তন আনতে তাঁর প্রস্তাবগুলো গত ৩০ বছরে ইতিবাচক সাড়া পায়নি।

পদত্যাগপত্রে রাজ্জাক বলেন, অতীতে অনেকবার পদত্যাগের কথা ভাবলেও তিনি নিজেকে বিরত রেখেছেন এই ভেবে যে দলের সংস্কার করা সম্ভব হলে এবং একাত্তরের ভূমিকার জন্য জামায়াত জাতির কাছে ক্ষমা চাইলে তা হবে একটি ঐতিহাসিক অর্জন। কিন্তু জানুয়ারি মাসে জামায়াতের সর্বশেষ পদক্ষেপ তাঁকে হতাশ করেছে। তাই বাধ্য হন পদত্যাগ করতে।

আবু নকীব ও আবদুর রাজ্জাক
২০১২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নয়া দিগন্ত পত্রিকায় ‘আরব বসন্ত এবং দেশে ইসলামি আন্দোলন’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুর রাজ্জাক। তিনি বাংলাদেশকে উপলক্ষ করে ওই নিবন্ধে মিসর, তিউনিসিয়া, মরক্কো ও তুরস্কে ইসলামপন্থী দলগুলো কীভাবে কৌশল বদল করে সাফল্য পেয়েছে, সে পর্যালোচনা করেন।

ওই নিবন্ধে বলা হয়, তুরস্কে এরদোয়ান ও আবদুল্লাহ গুল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি নামে নতুন দল গঠন করে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড (ইখওয়ানুল মুসলিমিন) বেশ কয়েকবার নাম পরিবর্তন করেছে। নীতিকৌশল পরিবর্তনের কারণে মিসরের গত নির্বাচনে তারা বিজয়ী হয়। তারা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি নামে আলাদা একটি প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করেছে। ভারতের জামায়াতে ইসলামী হিন্দ নাম পরিবর্তন করে ওয়েলফেয়ার পার্টি অব ইন্ডিয়া নামে নতুন দল করেছে পুরোনো জামায়াতের ব্যর্থতার কারণে।

এর ১৯ মাস পর ২৭ আগস্ট দৈনিক সংগ্রাম-এ ‘ইসলামি আন্দোলনে হীনমন্যতাবোধের সুযোগ নেই’ শিরোনামে আবু নকীবের নামে প্রকাশিত নিবন্ধে আবদুর রাজ্জাকের লেখার জবাব দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, ভারতের জামায়াতে ইসলামী নাম পরিবর্তন করেনি। তারা মূলত ‘সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয়’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে আসছিল। অতীতে ভুল শুধরে তারা নাম পরিবর্তন করেছে, এমন কথা যদি কেউ লিখে থাকেন, তিনি তথ্যবিচ্যুতির আশ্রয় নিয়েছেন।

নতুন দল গঠনের চিন্তার বিষয়ে আবু নকীবের নিবন্ধে বলা হয়, ইসলামি আন্দোলনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একটি পথ বন্ধ হলে ১০টি পথ খোলার মতো যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকতে হবে। বাস্তবে পথ বন্ধ হওয়ার আগে নিজেদের পক্ষ থেকে পথ বন্ধ করে কোনো কৌশল অবলম্বনের চিন্তাভাবনা হীনম্মন্যতার পরিচয় বহন করে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আবু নকীব ছদ্মনামে সংগ্রাম-এ নিবন্ধটি লিখেছিলেন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সে সময় কারাবন্দী জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী। তাঁর ছেলের নাম নকীবুর রহমান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। আর আবু নকীব শব্দের অর্থ নকীবের বাবা।

আবু নকীবের এ নিবন্ধ পরে প্রচারপত্র আকারে জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিলি করা হয়। 

জামায়াত ব্যথিত ও মর্মাহত
গতকাল বিকেলে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে আবদুর রাজ্জাকের মঙ্গল কামনা করেন। বিবৃতিতে শফিকুর রহমান বলেন, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকসহ আমরা দীর্ঘদিন একই সঙ্গে এই সংগঠনে কাজ করেছি। তিনি জামায়াতে ইসলামীর একজন সিনিয়র পর্যায়ের দায়িত্বশীল ছিলেন। তাঁর অতীতের সব অবদান আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।’

শফিকুর রহমান বলেন, তাঁর পদত্যাগে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। পদত্যাগ করা যেকোনো সদস্যের স্বীকৃত অধিকার। আমরা দোয়া করি তিনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

আরও পড়ুন:
জামায়াত ভাঙছে, তারপর কী?