ঝালকাঠি সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ত্রিবার্ষিক সম্মেলন পণ্ড হয়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সভামঞ্চ ভাঙচুর করেন। তাঁরা প্রধান অতিথিসহ জেলা সদর থেকে যাওয়া নেতাদের ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ করে রাখেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় পোনাবালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হেমায়েত মোল্লা আহত হন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহামুদ হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ প্রহরায় নেতা-কর্মীরা সভাস্থল ত্যাগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ডাকা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খান আরিফুর রহমান। বক্তব্য পর্ব শেষে সন্ধ্যায় তিনি পুরোনো কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পুনর্বহাল রেখে নতুন কমিটি ঘোষণা করলে সভাস্থলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় সভাপতি পদপ্রত্যাশী শাহিন আকনের অনুসারীরা সভাস্থলের চেয়ার ভাঙচুর শুরু করেন। পরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুরোনো কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হেমায়েত মোল্লার মাথা ফেটে যায়। একপর্যায়ে নেতারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। সেখানে তাঁদের ঘণ্টাব্যাপী অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমানের ভাষ্য, সম্মেলনে সভাপতি পদ পেতে ইচ্ছুক শাহিন আকনের লোকজন এই হামলা ও ভাঙচুর চালান। তাঁরা শান্তিপূর্ণ সম্মেলনকে পণ্ড করতে পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন আকন বলেন, ‘বর্তমান সভাপতি মজিবর রহমান ও হাকিম গাজীকে পুনরায় বহাল রেখে কমিটি ঘোষণা করলে দলের সাধারণ কর্মীরা এর প্রতিবাদ জানান। সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি-সম্পাদক নির্বাচিত করার দাবিকে নেতারা উপেক্ষা করলে এ ঘটনা ঘটে। এখানে আমার কোনো হাত নেই।’
এ ব্যাপারে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক ও পোনাবালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার খান বলেন, দলে পদ পাওয়াকে নিয়ে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। আমির হোসেন আমুর নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান খান আরিফুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমু এমপির নির্দেশে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কিছু নেতা–কর্মী ভোটাভুটির দাবি জানান।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ হাসান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অতিথিদের নিরাপত্তা দিয়ে ঝালকাঠি জেলা শহরে পৌঁছে দিই।’