>• বিশাল ব্যবধানে জিতেছে আ. লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট
• ভোটের হার নিয়ে জন্ম দিয়েছে নানা আলোচনা
• মহাজোট প্রদত্ত ভোটের ৭৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে
• বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের প্রাপ্ত ভোট ১২–১৫ শতাংশের মধ্যে
• বিজয়ী প্রার্থীদের ১১০ জনই পেয়েছেন প্রদত্ত ভোটের ৯০ শতাংশের বেশি
• বিপুল ভোটের হিসাবে সরকারি দলের মধ্যেও কিছুটা অস্বস্তি দেখা দিয়েছে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের মহাবিজয়ের পরে ভোটের হিসাব-নিকাশ নিয়ে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসন পেয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৬০টি আসনে প্রার্থী দিয়ে জয়ী হয়েছে ২৫৭টিতে। কেবল আসনসংখ্যা নয়, বিজয়ী প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের হিসাব এবং ভোটের ব্যবধান অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে পাওয়া ফলাফল অনুযায়ী, মহাজোট প্রদত্ত ভোটের ৭৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে। আর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের প্রাপ্ত ভোট ১২ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে। নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীদের ১১০ জনই পেয়েছেন প্রদত্ত ভোটের ৯০ শতাংশের বেশি ভোট। আর বিপুল ভোটের এই হিসাব সরকারি দলের মধ্যেও কিছুটা অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। বিএনপি এই ফল প্রত্যাখ্যান করেছে। সাধারণ মানুষও ভোটের ফলাফলে অনেকটা বিস্মিত। পশ্চিমা গণমাধ্যমে এর সমালোচনা করে লেখালেখি হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, ভোটের এমন ব্যবধান বাংলাদেশের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশের কাছে প্রত্যাশিত নয়।
নির্বাচনে মহাজোটের জয় যেমন ছিল একচেটিয়া, ভোটের আগে প্রচারণাও ছিল তা-ই। ভোটের দিনেও একচেটিয়া প্রচার ছিল মহাজোটের প্রার্থীদের। কেন্দ্রে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের কোনো এজেন্ট দেখা যায়নি। ভোট কারচুপির জন্য বিএনপি পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এবারে নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছেন ১৭ জন।
তবে সরকারি দলের পক্ষ থেকে এই ফলাফলকে স্বাভাবিক বলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির ভরাডুবি বিএনপির দোষে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘জনগণ যেভাবে ভোট দিয়েছে সেভাবে ভোট হয়েছে।’ আবার রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বিএনপি দলটিও ছিল অপ্রস্তুত, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এটিও সরকারি দলের একচেটিয়া বিজয়ের কারণ। তবে ঘাঁটি বলে পরিচিত আসনগুলোতে বিপুল ব্যবধানে যেভাবে বিএনপির প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন, তাতে ভোটের সামগ্রিক ফল নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সব মিলিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য, ভোটের ধরন ও ফলাফল দেখে অনেকের মতো তিনি নিজেও কিছুটা হতভম্ব। বিশ্লেষণে কিছু জায়গায় কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে। অন্যান্য নির্বাচনে এ রকম দেখা যায়নি, এটা নিয়ে পর্যালোচনার ব্যাপার আছে। বিএনপির সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয়েছিল ২০০৮ সালের নির্বাচনে। সেবার তারা ২৭টি আসন পেয়েছিল, ভোট পেয়েছিল ৩০ শতাংশ। এবার এর চেয়েও অনেক খারাপ অবস্থা হয়েছে। এটাও একটা গবেষণার বিষয় যে কেন এমন হলো।
৯০ ভাগের বেশি ভোট পেয়েছেন ১১০ জন
একটি আসনে যত বৈধ ভোট পড়েছে, তার ৯০ শতাংশের বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন ১১০ জন প্রার্থী। এঁদের মধ্যে ১০৮ জন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। বাকি দুজনও আওয়ামী লীগের জোটের শরিক। তাঁরা হলেন সাতক্ষীরা-১ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির মোস্তফা লুৎফুল্লা এবং পিরোজপুর-২ আসনে জেপির আনোয়ার হোসেন।
৯৯ শতাংশ ভোট পাওয়া ছয়জন প্রার্থীর মধ্যে আছেন সিরাজগঞ্জ-১ আসনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, গোপালগঞ্জ-১ আসনে ফারুক খান, গোপালগঞ্জ-২ আসনে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মাদারীপুর-১ আসনে নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, শরীয়তপুর-১ আসনে ইকবাল হোসেন। এসব আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা ১ শতাংশের কম ভোট পেয়েছেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার পেয়েছেন ৯৯ শতাংশ ভোট, ২০০৮ সালের নির্বাচনেও পেয়েছিলেন ৯৭ শতাংশ ভোট।
এ ছাড়া বিজয়ীদের মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ৮৯ জন, ৭০ থেকে ৭৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ৪৫ জন, ৬০-৬৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ২৮ জন, ৫০ থেকে ৫৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ১৮ জন এবং ৩০ থেকে ৪৯ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ৬ জন। দুজনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, ১৪৬টি আসনে মহাজোটের প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা ১০ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ৮৩টি আসনে তাঁদের ভোট ৫ শতাংশেরও কম। এঁদের প্রায় সবাই ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী। অন্তত ১৯টি আসনে দ্বিতীয় হয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা। এই দলটি এবার ২৯৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। তবে কোথাও তাদের প্রার্থী জয়ী হয়নি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে পাওয়া ভোটের ফলাফলের প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
১৭টি আসনে মোটামুটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা
ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২৯৮টি সংসদীয় আসনের মধ্যে মাত্র ১৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট হয়েছে। বাকি আসনগুলোতে মূলত ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ে তুলতে পারেননি। যে আসনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে সেগুলোর বেশির ভাগ উত্তরবঙ্গে। পঞ্চগড়-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মজাহারুল হক প্রধান ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। বিএনপির প্রার্থী নওশাদ জমির পেয়েছেন ৪২ শতাংশ ভোট। এ ছাড়া পঞ্চগড়-২, ঠাকুরগাঁও-৩, দিনাজপুর-৪, লালমনিরহাট-৩, কুড়িগ্রাম-১, বগুড়া-৪ (বিএনপি জয়ী), চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১, ২, ৩, নওগাঁ-১ ও ৩, রাজশাহী-২ আসনে মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ভোটের হার মোটামুটি কাছাকাছি। এসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। এ ছাড়া বরিশাল-৩, টাঙ্গাইল-৮, ফরিদপুর-৪, কুমিল্লা-১ আসনেও দুই জোটের প্রার্থীদের ভোটের ব্যবধান কাছাকাছি।
সবখানে বিশাল ব্যবধানে হারলেও খালেদা জিয়ার আসন বগুড়া-৬ থেকে বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ৮১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর পেয়েছেন ১৫ শতাংশ ভোট। অবশ্য নিজের আসন ঠাকুরগাঁও-৩-এ বড় ব্যবধানে হেরেছেন মির্জা ফখরুল। এখানে তিনি পেয়েছেন ৩৬ শতাংশ ভোট, আর বিজয়ী প্রার্থী আওয়ামী লীগের রমেশ চন্দ্র সেন পেয়েছেন ৬৩ শতাংশ ভোট।
আগের হিসাব
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পাওয়া ভোটের হার ছিল ৪৯ শতাংশ। বিএনপি পেয়েছিল ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ। ২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৪০ দশমিক ২ শতাংশ ভোট, আর বিএনপি পেয়েছিল ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট। সেবার সরকার গঠন করেছিল বিএনপি।
১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ। সেবার তারা পেয়েছিল ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট। বিপরীতে বিএনপি পেয়েছিল ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করেছিল। সেবার আওয়ামী লীগ ভোট পায় ৩০ দশমিক ১ শতাংশ আর বিএনপি ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলভিত্তিক ভোটের হার এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের ভোট ৭৫ শতাংশের বেশি হবে। আর বিএনপির ভোট হবে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ।
ঘাঁটিতেও দুর্দশা বিএনপির
ফেনী-১ ও ৩ আসনে ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কখনো হারেনি বিএনপি। একইভাবে লক্ষ্মীপুর ১, ৩ ও ৪ আসনও বিএনপির আসন হিসেবে পরিচিত। এসব আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা শুধু যে পরাজিত হয়েছেন, তা নয়, হেরেছেন বিশাল ব্যবধানে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিজের এলাকা ফেনীর তিনটি আসনের কোনোটিতে বিএনপি ১১ শতাংশের বেশি ভোট পায়নি। ফেনী-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী প্রায় ১১ শতাংশ, ফেনী-২ আসনে ২ শতাংশ আর ফেনী-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী পেয়েছেন ৭ শতাংশ ভোট। লক্ষ্মীপুর-১ আসনে ঐক্যফ্রন্টের (এলডিপি) প্রার্থী পেয়েছেন ২ শতাংশ ভোট। আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন খান পেয়েছেন ৯৬ শতাংশ ভোট। লক্ষ্মীপুর-২-এ বিএনপির প্রার্থী প্রায় ১০ শতাংশ, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে ৬ শতাংশ এবং লক্ষ্মীপুর ৪ আসনে ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বিএনপির প্রার্থী।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জেলা বগুড়াতেও বিএনপির শক্তিশালী অবস্থান আছে বলে বিবেচনা করা হয়। এখানে তুলনামূলক ভালো ফল করেছে বিএনপি। বগুড়ার ৭টি আসনের মধ্যে দুটি আসনে (বগুড়া-৪ ও ৬) বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। আর বগুড়া-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী পেয়েছেন প্রায় ৬ শতাংশ, বগুড়া-২-এ প্রায় ২৫ শতাংশ, বগুড়া-৩-এ ২৬ শতাংশ, বগুড়া-৫-এ ১২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বিএনপির প্রার্থী।
বড় ব্যবধানে বিজয়
বেশির ভাগ আসনে জয়ী প্রার্থীদের সঙ্গে পরাজিতদের ভোটের ব্যবধান লাখের ওপরে। সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. মো. এনামুর রহমান। তাঁর সঙ্গে বিএনপির প্রার্থীর ব্যবধান ৪ লাখ ২০ হাজার ৬৪৮ ভোটের। রাজবাড়ী-২ আসনে জিল্লুল হাকিম জয়ী হয়েছেন ৩ লাখ ৯৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে। কুমিল্লা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের আ হ ম মুস্তফা কামাল জয়ী হয়েছেন ৩ লাখ ৯২ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে। জামালপুর-৩ আসনে মির্জা আজম তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ৩ লাখ ৮০ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন। নোয়াখালী-৪ আসনে একরামুল করিম চৌধুরী জয়ী হয়েছেন ৩ লাখ ৭২ হাজার ভোটের ব্যবধানে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগের র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বিএনপির প্রার্থীর চেয়ে ৩ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। এ ছাড়া জামালপুর-৫ আসনে মোজাফ্ফর হোসেন ৩ লাখ ৪২ হাজার ৯৩৫, পিরোজপুর-১ আসনে শ ম রেজাউল করিম ৩ লাখ ৩০ হাজার, যশোর-৩ আসনে কাজী নাবিল আহমেদ ৩ লাখ ২৯ হাজার, সিরাজগঞ্জ-১ আসনে মোহাম্মদ নাসিম ৩ লাখ ২৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।
বিএনপির বড় নেতাদের ফল
বিএনপির বড় নেতারাও এই নির্বাচনে হেরেছেন বড় ব্যবধানে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ নোয়াখালী-৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে। এই আসনে মওদুদ পেয়েছেন ১০ হাজার ৯৭০ ভোট। আর ওবায়দুল কাদের পেয়েছেন মোট ভোটের ৯৩ শতাংশ বা ২ লাখ ৫২ হাজার ৭৪৪ ভোট।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুমিল্লার দুটি আসন থেকে নির্বাচন করে বড় ব্যবধানে হেরেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লা-১ আসন থেকে পেয়েছেন ৯৫ হাজার ৫৪২ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগের সুবিদ আলী ভূঁইয়া পেয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ ভোট। কুমিল্লা-২ আসন থেকে খন্দকার মোশাররফ পেয়েছেন ২০ হাজার ৯৩৩ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগের সেলিমা আহমাদ ২ লাখ ৬ হাজার ১৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১১ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮৯৮ ভোট। এই আসনে জয়ী আওয়ামী লীগের এম আবদুল লতিফ পেয়েছেন ২ লাখ ৮৩ হাজার ১৬৯ ভোট।
ঢাকা-৭ আসনে বিএনপির মির্জা আব্বাস পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৭১৭ ভোট। এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী রাশেদ খান মেনন পেয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫৩৮ ভোট।
নরসিংদী-২ আসনে বিএনপির আবদুল মঈন খান পেয়েছেন ৭ হাজার ১৮০ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগের আনোয়ারুল আশরাফ খান ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭১১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
ঢাকা-৩ থেকে বিএনপির গয়েশ্বর চন্দ্র রায় পেয়েছেন ৭ শতাংশ ভোট (১৬ হাজার ৬১২) আর ২ লাখ ২১ হাজার ৩৫১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নসরুল হামিদ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হারুন অর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্ট যেভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, তাকে অংশ নেওয়া বলা যায় না। তারা সর্বাত্মকভাবে নির্বাচনে নামেনি। শুরু থেকে শুধু অভিযোগ আর অভিযোগ করে গেছে। স্থানীয়ভাবে যেসব জায়গায় বিএনপির শক্ত অবস্থান ছিল, সেখানে তারা ভালো করেছে। লাখের বেশি ভোটও পেয়েছে। সাংগঠনিক এবং আদর্শিক দিক থেকে বিএনপি বড় ধরনের বিপর্যয়ে পড়ে আছে। বিএনপির দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও রাজনৈতিক চর্চার ফল এই পরিণতি। যার অধীনেই নির্বাচন হতো বিএনপির একই পরিণতি হতো। তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য নতুনভাবে সংগঠিত হতে হবে।