আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সদ্য প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্মৃতিচারণা করে দলটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সৈয়দ আশরাফ ছিলেন একজন সৎ, পরিচ্ছন্ন ও সফল রাজনীতিক। তিনি তাঁর সততা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও মেধা দিয়ে তা প্রমাণ করেছেন।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে সহযোগী সংগঠনের যৌথসভার আগে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সততা ও যোগ্যতা দিয়ে সৈয়দ আশরাফ আওয়ামী লীগের বাইরেও অন্য রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্থান করে নিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নতুন কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত করা হয়। আজকের বৈঠকের শুরুতে প্রয়াত সৈয়দ আশরাফের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
যৌথসভায় আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ঢাকার আসনগুলো থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। এই বিজয় উদ্যাপনের জন্য ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিতেই এ যৌথসভা আয়োজন করা হয়। সভার আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিএনপির নালিশ ছাড়া আর কোনো অবলম্বন নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিদেশিদের কাছে নালিশ করা ছাড়া বিএনপির এখন আর অবলম্বন কী? ১০ বছর ধরে একটা আন্দোলন করতে পারেনি। জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে চরমভাবে পরাজিত হয়েছে। আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনেও ব্যর্থ, এখন তাদের নালিশ ছাড়া আর কোনো অবলম্বন নেই। বিএনপি নেতারা দেশের লোকের কাছে তো অনেক বলেছে, এখন বিদেশিদের কাছে তারা নালিশ করে যাচ্ছে। সেটা তাদের পুরোনো অভ্যাস, পুরোনো অভ্যাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এখানে আমাদের কী বলার আছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেসব কথাবার্তা বলছেন, এটা আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ একজন রাজনীতিকের অসংলগ্ন প্রলাপ।’
অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটি উদাহরণ দিয়ে বলি। শুধু হাতিয়ার দিকে দেখুন। যেখানে বারবার আমরা চেষ্টা করেও নেতাদের এক করতে পারিনি, অনেক চেষ্টা হয়েছে সেখানে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য, বারবার চেষ্টা করেছি। এবার কঠিন ঐক্য ছিল, হাতিয়া সবার আগে ঐক্যবদ্ধ ছিল, এক মঞ্চে সবাই। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরেও তারা ঐক্যবদ্ধ আছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল ১৭ জন। শেষ পর্যন্ত কিন্তু থাকেনি, আমাদের নেতৃবৃন্দের প্রয়াসে আমরা বিদ্রোহকে প্রশমিত করতে পেরেছি। দৃশ্যমান তেমন কোনো বিদ্রোহ দেখা যায়নি। এটাই আওয়ামী লীগের বিজয়ের প্রথম সোপান।’
আজকের সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বি এম মোজাম্মেল হক ও এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।