ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রচারে নৌকায় ভোট না দিলে এলাকা ছাড়তে বলে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগমের দেওয়া বক্তব্যের অডিও ও ভিডিও পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এ নিয়ে প্রকৃত তথ্য জানতে তাঁর (মাহমুদা) সঙ্গে কথা হয়েছে।
কাদের বলেন, কোনো অরাজনৈতিক বক্তব্য যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, যার যার খুশিমতো বক্তব্য কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেবে না আওয়ামী লীগ।
আজ শনিবার দুপুরে সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এমন কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় নির্বাচনী প্রচারে প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হয়েছেন কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম। গত বৃহস্পতিবার শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে এক নির্বাচনী সভায় মাহমুদা বেগম বলেন, ‘যাঁদের মনে ধানের শীষের সঙ্গে প্রেম আছে, তাঁরা কী করবেন? ১৩ তারিখে ঠাকুরগাঁও ছেড়ে চলে যাবেন। ১৩ তারিখ সন্ধ্যার পরে তাঁদের দেখতে চাই না। তাঁদের ভোটকেন্দ্রে আসার কোনো প্রয়োজন নাই। তাহলে ভোটকেন্দ্রে যাবে শুধু কে? নৌকা, নৌকা আর নৌকা।’
আগামীকাল সারা দেশে চতুর্থ ধাপের ৫৪টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও পৌরসভাও রয়েছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং গণতান্ত্রিক মূলবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আগের তিন ধাপের নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় আগামীকালের নির্বাচনও সুষ্ঠু, অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। পৌরসভা নির্বাচনে ভোটারদের অবাধ ভোটাধিকার প্রয়োগে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না সরকার।
সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ইচ্ছেমতো রচনা করছে বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত বিষয় প্রশ্নবিদ্ধ করার অধিকার কারও নেই। নতুন প্রজন্ম এখন সত্যিকারের ইতিহাস জানতে পারছে।
কাদের বলেন, বিএনপিই এ দেশে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির জনক। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘদিন ধরে তাদের (বিএনপির) নেতৃত্বে স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী অপশক্তি ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, কারা মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে সপরিবারে হত্যার বেনিফিশিয়ারি, কারা এ দেশে খুনিদের বিচার চাওয়ার অধিকার হরণ করেছিল, তা নতুন প্রজন্ম জানতে পারছে বলে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।
গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে বিএনপিই কৃত্রিম বাধা তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বিএনপির একদিকে নির্বাচনবিমুখ রাজনীতি, অন্যদিকে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখায় দেশের গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খাচ্ছে।
বিএনপি মুখোশের আড়ালে স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের পৃষ্ঠপোষক বলেও অভিযোগ করেন তিনি।