সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাসসহ অজ্ঞাতনামা ৬৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক সরকার। অপর দিকে আবদুল লতিফ বিশ্বাসের ছেলে স্থানীয় দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাজুক বিশ্বাস বাদী হয়ে বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হককে প্রধান আসামি করে যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক সরকারসহ ২৮ জনকে আসামি করে আরেকটি পৃথক মামলা করেছেন। আধা ঘণ্টার ব্যবধানে বেলকুচি থানায় দুটি মামলাই করা হয়েছে আজ বুধবার বিকেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৬ জুন শনিবার বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের জোকনালা গ্রামে ঈদের পরে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হকসহ দলীয় নেতাদের নিয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় পথে জোকনালা কালীবাড়ি মোড়ে পৌঁছালে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাসের পক্ষ থেকে গুলি ছুড়লে যুবলীগের আহ্বায়ক প্রাণে বেঁচে যান। তবে এ সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হন। যুবলীগের আহ্বায়ককে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা করে নেতা-কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি মিলিয়ে ৬৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
এদিকে একই দিনের কথা উল্লেখ করে লাজুক বিশ্বাস মামলায় অভিযোগ করেছেন, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক সরকার ও তাঁর দলবল আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি ছুড়লে নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় অল্পের জন্য সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস ও লাজুক বিশ্বাস প্রাণে বেঁচে যান।
মামলার বিষয়ে সাজ্জাদুল হক বলেন, ‘আমরা ঘটনার দিনই মামলা থানায় জমা দিয়েছি। কিন্তু রেকর্ড হতে কেন এত দেরি হলো বা আরেকটি মামলা কেন রেকর্ড করা হলো, বিষয়টি বরং আমাদের চেয়ে পুলিশই ভালো জানে।’
এ ব্যাপারে আবদুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, ‘আমাকে আসামি করে যে মামলা করা হয়েছে, তা মিথ্যা ও বানোয়াট এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে মূল ঘটনা বা মূল অপরাধীরা বের হয়ে আসবে।’
আজ সন্ধ্যায় বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম পাল্টাপাল্টি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে জানান, আজ থানায় দুটি মামলা রুজু হয়েছে। একটির বাদী ফারুক সরকার এবং আরেকটি মামলার বাদী লাজুক বিশ্বাস। তবে তদন্তের স্বার্থে মামলার আসামিদের নাম বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
বেলকুচির ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের সগুনা-কালীবাড়ি গ্রামীণ সড়কে ৬ জুন বিকেলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় সংঘর্ষে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহম্মেদসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষে একে অপরের বিরুদ্ধে গুলিবর্ষণ এবং অর্ধশত মোটরগাড়ি ও দুটি মাইক্রোবাস ভাঙচুরের ঘটনায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ এনে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি থানায় অভিযোগ করে।