নিজেদের লোকদের দুর্নীতির সুযোগ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি থেকে মানুষের চোখ সরিয়ে নিতে সরকার কুমিল্লার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আদা, পেঁয়াজ, রসুন যেকোনো পণ্যে হাত দিলে বিদ্যুতের মতো শক করে।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয় দল নামে একটি সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে রিজভী এসব কথা বলেন। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে রিজভী বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হুহু করে বাড়ছে। আদা, পেঁয়াজ, রসুন যেকোনো পণ্যে হাত দিলে, বিদ্যুৎ যেমন শক করে, তেমন শক করে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেচের পানির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যর বৃদ্ধি ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি। সরকার এটা নিয়ন্ত্রণ করা দূরে থাক। অধিকাংশ পত্রপত্রিকায় এসেছে সরকারের লোকেরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। চারদিক থেকে ধিক্কার উঠেছে। মানুষ ছি ছি করছে। গণতন্ত্র নেই, কথা বলার স্বাধীনতা নেই, নির্বাচন নেই। গণতন্ত্রের কবরের ওপর আজকে শেখ হাসিনা দ্রব্য মূল্যের দাম বৃদ্ধি করেছেন। কারণ তাঁর লোকদের, সিন্ডিকেটের দুই পকেট যেন স্ফীত-ভারী হয়ে যায়। আর এটা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতে হবে। এই সরানোর জন্য কুমিল্লার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।’
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, জনগণ বা কোনো রাজনৈতিক দল দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করেনি। সরকার সম্প্রীতি নষ্ট করেছে। বিদেশিদের দেখাতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আওয়ামী লীগ সরকারের নীতি হচ্ছে ‘সর্প হয়ে দংশন করে, ওঝা হয়ে ঝাড়ে’। সরকার সর্প হয়ে দংশন করে, ওঝা হয়ে ঝাড়ে। কিন্তু এতে কত নিরীহ প্রাণ চলে যাচ্ছে তার খবর সরকার জানে না।
বিএনপি নেতা রিজভী আরও বলেন, ‘সরকারের উসকানিতে আমরা কোনো প্রতিক্রিয়া জানাব না। শেখ হাসিনা তাঁর শত্রু বানিয়েছে দেশের মানুষদের। আজ প্রেসক্লাবে নাৎসিবাদী সরকারের থাবা পড়েছে। বিএনপিকে সভা করতে না দেওয়ার ঘটনা হচ্ছে। এতে খুন-গুম আরও করা হবে, তবে কিছু বলা যাবে না। কথা বলার আর জায়গা থাকল না। তারেক রহমান কথা বলেছে, তাই তাদের গায়ে জ্বালা।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলের সভাপতি এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, নাগরিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
মানববন্ধনে খায়রুল কবির বলেন, নির্বাচন কমিশনের সুনির্দিষ্ট আইন না থাকায় সরকার ইচ্ছেমতো নির্বাচন কমিশন গঠন করছে। দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে দেওয়া হবে না। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যদি কখনো নির্বাচন হয়, আওয়ামী লীগ তাদের জামানত হারাবে। তাই জনগণের চোখ সরিয়ে রাখার জন্য বারবার ইস্যু হিসেবে পরীমনি, কুমিল্লার ঘটনা হচ্ছে। এগুলো আওয়ামী লীগ ঠান্ডা মাথায় ঘটাচ্ছে।