জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হলো গত শনিবার। সে অনুষ্ঠানে সহস্রাধিক সমর্থক নিয়ে মুরাদ সিদ্দিকী উপস্থিত হন। তারপর থেকেই জেলার রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে—মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন?
মুরাদ সিদ্দিকী গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করছি। বড় ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর দলে গিয়েছিলাম। কিন্তু কিছুদিন সেখানে কাজ করার পর নিষ্ক্রিয় হয়ে যাই। এখন আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করতে চাই।’
টাঙ্গাইলের বহুল আলোচিত সিদ্দিকী পরিবারের সন্তান মুরাদ সিদ্দিকী। তাঁর বড় ভাই আবদুল লতিফ সিদ্দিকী শেখ হাসিনা সরকারে মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। তিনি দল ও মন্ত্রিসভা থেকে ২০১৪ সালে বহিষ্কৃত হন। এর আগে মুরাদ সিদ্দিকীর অপর বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেন। মুরাদ সিদ্দিকীও সে সময় কাদের সিদ্দিকীর দলে চলে যান। ২০০১ ও ২০০৮ সালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে নির্বাচন করেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনের পর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে মুরাদ সিদ্দিকীর দূরত্ব তৈরি হয়। তারপর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ছেড়ে দেন তিনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। সে নির্বাচনে লতিফ সিদ্দিকী তাঁকে সহযোগিতা না করায় তাঁর সঙ্গে মতবিরোধ হয়। তারপর থেকেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন আছে মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে ফিরে আসছেন। ইতিমধ্যে মুরাদ সিদ্দিকীর একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান, প্যানেল মেয়র সাইফুজ্জামান সোহেল, গোলাম কিবরিয়া ও তানভীর হাসান আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। তাঁরা দলের বিভিন্ন পর্যায়ে পদও পেয়েছেন।
গত শনিবার মুরাদ সিদ্দিকী বিশাল মিছিল নিয়ে আবদুর রাজ্জাকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এর আগে তিনি আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে ঢাকায় সাক্ষাৎ করে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। শনিবার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে প্রথম সারিতে আসন গ্রহণ করেন। তাঁকে দলের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
জেলা আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, দলের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা মুরাদ সিদ্দিকীকে আওয়ামী লীগে নিতে তৎপর। সভাপতিরও এতে আপত্তি নেই। তবে খান পরিবার সমর্থকেরা মুরাদ সিদ্দিকীর যোগদানের বিষয়ে ঘোর বিরোধী।
এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, ‘মুরাদ সিদ্দিকী আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর যোগদানের ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে। দলীয় সভানেত্রীর মতামত নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’