ভোরের আলো তখনো ফোটেনি। একজন-দুজন করে রাস্তায় বের হচ্ছে কেবল। সে সময় হোটেল খুলনা সরগরম। বিছানা গোছাতে ব্যস্ত পতাকা বিক্রেতারা। একজন ঘুম থেকে উঠলে অন্যকে উঠিয়ে দিচ্ছেন। মাদারীপুর থেকে খুলনায় জাতীয় পতাকা বিক্রি করতে এসেছে ১৩ জনের একটি দল। ষোলোই ডিসেম্বর সামনে রেখে তাঁরা পতাকা বিক্রি করতে এসেছেন। শুধু পতাকা নয়, লাল-সবুজের ব্যান্ডেনা, ব্রেসলেট, কাগজের বিজয় দিবস লেখা টুপি বিক্রি করছেন তাঁরা। কেউ কৃষক, কেউ মৌসুমি সবজি ব্যবসায়ী, কেউ গার্মেন্টস কর্মী, কেউ আবার শিক্ষার্থী। পতাকা বিক্রির ছলে খুলনা শহরটি ঘুরে ঘুরে দেখাই তাঁদের উদ্দেশ্য। ১২৫ টাকা প্রতিদিন ঘরের বিছানাভাড়া আর খাবার খরচসহ ২৫০ টাকা খোরাকি উঠে গেলেই একরকম খুশি তাঁরা। সারা দিন বিক্রি শেষে রাতে ফেরেন, সারা দিন কী হলো, কত টাকা বিক্রি হলো, আর নতুন কী অভিজ্ঞতা হলো—এ নিয়ে গল্প জমে। গল্প ফুরালে আবার ঘুম। পরের দিনের কাকডাকা ভোরে উঠতে হবে।
ভোরবেলায় পতাকা বিক্রেতা রেজাউল চলেছেন পতাকা বিক্রি করতেবের হওয়ার আগে পতাকা, মাথার ব্যান্ডসহ অন্যান্য উপকরণ গুছিয়ে নিচ্ছেন সুজন মাতবর মিজান প্রতিবছর এ সময় খুলনায় আসেন পতাকা বিক্রি করতে। সবচেয়ে বেশি পতাকা বিক্রির অভিজ্ঞতা তাঁর। পথঘাটও তাঁর বেশি চেনা। তাই বিক্রিও তাঁর বেশি। ছয় বছর ধরে প্রতিবছরই আসেনপতাকা বিক্রি করতে যাওয়ার আগে একজন অন্যজনকে সাজিয়ে দিচ্ছেন। শহরের হেলাতলা মোড়ে পতাকা নিয়ে বিক্রির সময় মুহূর্তটি মুঠোফোনে ধারণ করে রাখছেন এক বিক্রেতাপতাকার পসরা নিয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র মুরসালিন শহর ঘুরে দেখছে। শহরের ধর্মসভা এলাকায় পছন্দের পতাকা কিনছেন একজন। বিক্রি করছেন রেজাউল। শহরের হাদিস পার্ক এলাকায়কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে পতাকা বিক্রির উদ্দেশ্যে বের হয়েছে একটি দল। শহরের কে বি ঘোষ সড়কেপতাকা বিক্রি করতে হেঁটে চলছে একটি দল। শহরের হেলাতলা মোড় এলাকায়এ শহর নিয়ে থাকবে তাঁদের স্মৃতি আর পরিযায়ী পাখির মতো আসা মানুষদের তৈরি বিজয়ের সেই প্রতীক থাকবে খুলনার কোনো কোনো শিশুর হাতে