‘আমাদের দাবি একটাই—চারুকলা, চবি ক্যাম্পাসে চাই’; এই দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা তিন মাসের বেশি সময় ধরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে চলেছেন। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তনের যৌক্তিক দাবি পূরণের নিমিত্তে ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ, মানববন্ধন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতীকী ক্লাস, অবরোধ, ক্লাস বর্জন, স্থাপনা শিল্প সৃষ্টির মাধ্যমে দাবি তুলে ধরার মতো শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
আন্দোলনের ৮২তম দিনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দফায় দফায় শহরের বাদশা মিয়া রোডে অবস্থিত চারুকলার বর্তমান ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী সরকারের বাজেট ঘাটতির কথা উল্লেখ এ মুহূর্তে এ দাবি পূরণ করা সম্ভব নয় বলে জানান। শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি কলাভবনের যেকোনো একটিতে চারুকলাকে স্থানান্তর করলে এত বাজেট কেন লাগবে, জানতে চাইলে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলেই হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
পরদিন সাবেক মেয়র, জেলা প্রশাসক এসে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে তাঁদের ক্লাসে ফেরার অনুরোধ করলে শিক্ষার্থীরা এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দিয়ে ক্লাসে ফেরেন। ৭ দিনের স্থলে ৯ দিন অতিবাহিত হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করেন।
এক যুগ ধরে অর্থাৎ চারুকলা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শহরে নিয়ে আসার পর থেকে এর শিক্ষার্থীরা মূল ক্যাম্পাসে ফেরার জন্য আন্দোলন করে আসছেন। প্রতিবারই ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ নানা ছলচাতুরী করে, আন্দোলনকারীদের ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের মধ্যে দুটি পক্ষ সৃষ্টি করে দ্বন্দ্ব–সংঘাতে লাগিয়ে, মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে, আন্দোলন থামিয়ে দিলেও এবার শিক্ষার্থীরা অনেক সংঘটিত ও ঐক্যবদ্ধভাবে তিন মাস ধরে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায়ে তৎপর।
তিন মাস আগে চারুকলার শিক্ষার্থীরা ২২ দফাসংবলিত চারুকলা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তনের এক দাবিতে ভিসি বরাবর দরখাস্ত প্রদান করে। ২২ দফা দাবিগুলো হচ্ছে:
১. ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ ক্লাসরুম চাই।
২. ছাত্র এবং ছাত্রী হল এবং ডাইনিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. প্রতিটি ভবনে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
৪. নিজস্ব ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউট গঠনের দীর্ঘ ১২ বছর (প্রায় এক যুগ) হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের যাওয়া–আসার কোনো বাস নেই। একটি স্টাফ বাসে ঠাসাঠাসি করে যাওয়া–আসার বদলে শিক্ষার্থীদের জন্য নিজস্ব বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. প্রতিটি ভবনে পর্যাপ্ত শৌচাগার এবং মেয়েদের জন্য নিরাপদ পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. ক্লাসের বরাদ্দকৃত আর্ট ম্যাটেরিয়ালের ব্যবস্থা ও পরীক্ষার প্রশ্নে উল্লেখিত ম্যাটেরিয়ালের ব্যবস্থা করা।
৭. ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ, ক্লাসরুম পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও যথাযথ বর্জ্যনিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. লাইব্রেরিতে লাইব্রেরিয়ান, বই–সংকট, ইউপিএসের ব্যবস্থা করে লাইব্রেরি ব্যবহারের সময় বাড়ানো।
৯. চারুকলায় অকেজো পড়ে থাকা জেনারেটরের ব্যবস্থা চালু করা।
১০. মেডিকেল ব্যাকআপ, ফার্স্টএইডসহ শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বক্ষণিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত রাখা।
১১. সাংস্কৃতিক, খেলাধুলার পর্যাপ্ত সরঞ্জামের ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ দিতে হবে।
১২. শিক্ষার্থীদের জন্য ফটোকপি মেশিন, প্রিন্ট ও স্টেশনারি সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
১৩. অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ (মশা, পানি জমা, ময়লা ইত্যাদি) নির্মূলকরণ।
১৪. প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে বৈদ্যুতিক সংকট দূরীকরণ, বিদ্যুৎ–সংযোগ, লাইট-ফ্যানের পর্যাপ্ত ব্যবহার নিশ্চিতকরণ।
১৫. ছাত্র ও ছাত্রী মিলনায়তনের ব্যবস্থা।
১৬. সেমিনারের পরিধি বাড়ানো, প্রজেক্টর ও পর্যাপ্ত সাউন্ড সিস্টেম নিশ্চিতকরণ।
১৭. পুরো প্রাঙ্গণে ইন্টারনেট (ওয়াইফাই) সংযোগ নিশ্চিতকরণ।
১৮. প্রার্থনাগারের সুব্যবস্থা চাই।
১৯. ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ও সন্ধ্যার পর পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
২০. প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য লকারের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
২১. কম্পিউটার ল্যাবে পর্যাপ্ত কম্পিউটারের সুব্যবস্থা ও প্রজেক্টর দিতে হবে।
২২. মডেলের সংকট সমাধান করতে হবে।
এই ২২ দফার সব কটি পূরণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তাই এখন শিক্ষার্থীদের ২২ দফার এক দাবি, ‘চারুকলা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চাই।’
বলতে হয়, শিল্পী রশীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে, ওনারই হাতে গড়া দুটি প্রতিষ্ঠান ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ ও চট্টগ্রাম শহরের চারুকলা কলেজ স্বতন্ত্রভাবে ২০১০ সাল পর্যন্ত তাদের দাবি আাদয়ে কাজ করেছে। কিন্তু এসব শিক্ষার্থী কখনোই ক্যাম্পাস থেকে শহরে আসতে চাননি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস সুদীর্ঘ। প্রতিবারই ছাত্রছাত্রীদের কষ্টার্জিত সাফল্য বেহাত হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের কিছু অদূরদর্শী, স্বার্থপর এবং সাংগঠনিক ও প্রশাসনিকভাবে অদক্ষ কিছু মানুষের জন্য।
১৯৯৮ সালের কথা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগের বার্ষিক বাজেট বৃদ্ধি, শিক্ষাভ্রমণের ফি বৃদ্ধি, প্রতিবছর নিয়মিত বার্ষিক প্রদর্শনীর জন্য বাজেট বরাদ্দ, শ্রেণিকক্ষের সংস্কার এসব দাবিতে ওই সময় গড়ে ওঠা আন্দোলন একসময় চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার দাবিতে পরিণত হয়। সে বছর আমি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। চারুকলার সব শিক্ষার্থী ওই সময় এ আন্দোলন ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে রাজধানীর শাহবাগে পর্যন্ত নিয়ে যায়। শাহবাগে ঢাকা চারুকলার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করে, তৎকালীন ক্রীড়া ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হাতে স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে আশ্বাস মিলে দাবি বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে।
পরবর্তী বছর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তনে এসে চারুকলা বিভাগকে ইনস্টিটিউট ঘোষণা দিলেন এবং চারুকলা বিভাগ কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ জন্য করণীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেন। খবরটা পেয়ে আমরা পরদিন আনন্দ–উল্লাসে মেতে উঠলাম। কিন্তু বিধিবাম, কিছুদিন যেতে না যেতেই শুনতে পেলাম চারুকলা বিভাগের কতিপয় শিক্ষক এ প্রক্রিয়ায় চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত সরকারি চারুকলা কলেজকেও একত্র করার পরিকল্পনা করছেন এবং ওইভাবেই সরকারের কাছে প্রস্তাব পেশ করেন। সরকারও তা অনুমোদন দেয়। কিন্তু শিক্ষকদের এক পক্ষ বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি।
চারুকলা ইনস্টিটিউট বাস্তবায়ন হলে তা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই হতে হবে আর সরকারি চারুকলা কলেজ স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে শহরে আছে এবং থাকতে হবে এ দাবিতে ওই সময় চারুকলা বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক, ভাস্কর ও শিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ স্যার আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালতে মামলা চলতে থাকে দীর্ঘদিন, খালিদ স্যার চলে যান অবসরে, বৃদ্ধ বয়সে আদালতের আঙিনায় বারবার হাজিরা দেওয়া তাঁর পক্ষে আর সম্ভব হয়ে ওঠে না। অবশেষে আদালতের রায় আসে প্রস্তাবিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটে শহরের বাদশা মিয়া রোডের চারুকলা কলেজকেও একীভূত করা হবে।
অবশেষে ২০১০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়তে বেতন ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গড়ে ওঠা আন্দোলন রুখতে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। ওই বন্ধের মধ্যেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলা শহরে নিয়ে আসা হয়। এর সঙ্গে সঙ্গে রশীদ চৌধুরীর হাতে গড়া দুটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর খুব স্বাভাবিকভাবেই চারুকলার শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে, বিক্ষুব্ধতায় ফেটে পড়ে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে আন্দোলনে নেমে পড়ে। সেই ১৯৯৮ সাল থেকে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সার্বিকভাবে যুক্ত থাকার চেষ্টা করি। খুব কাছ থেকে দেখেছি ছাত্রছাত্রীরা কত কষ্ট করেছে শিক্ষকদের হুমকি–ধমকি, তাদের আজ্ঞাবহ শিক্ষার্থীদের শারীরিক আক্রমণ। সবকিছু মোকাবিলা করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া, অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস এবং আন্দোলনের পরিসমাপ্তি। যে আশ্বাস আজও পূরণ হয়নি।
এখন, দুটি প্রতিষ্ঠানকে একত্র করে ইনস্টিটিউট বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা কেন, কার স্বার্থে? এ পরিকল্পনায় আজ ও আগামীর চারুশিক্ষার্থীদের কোনো লাভ হলো কি না, নাকি বিশাল একটা ক্ষতি হলো, তা একটু খোলাসা করা জরুরি। প্রথমত ওই সময়ে চারুকলা বিভাগের যেসব শিক্ষক শহরের চারুকলা কলেজের সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়েছিলেন, তাঁরা কেবলই ব্যক্তিস্বার্থে এটা চেয়েছিলেন কেননা ওই সময় চারুকলা কলেজে অস্থায়ী পদে তাঁদের পরিবারের লোকজন ও বন্ধুরা শিক্ষকতা করছিলেন। দুটি প্রতিষ্ঠানকে আত্তীকরণের মাধ্যমে তাঁদের চাকরি স্থায়ী করা ছিল প্রথম উদ্দেশ্য।
দ্বিতীয়ত তাঁদের সবার আবাসস্থল ছিল শহরে। ২২ কিলোমিটার দূরে ক্যাম্পাসে গিয়ে চাকরি করা তাদেঁর জন্য খুবই কষ্টের। শহরে নিয়ে এলে ইচ্ছেমতো কর্মস্থলে আসা যাবে।
তৃতীয়ত, শুধু চাকরির বেতনে তো তাঁদের খরচ কুলায় না, সরকারি–বেসরকারি কমিশন ওয়ার্কগুলো বাগিয়ে নিতে শহরে অবস্থানটাও বড় সহায়ক।
কিন্তু এতে করে সামগ্রিক চারুকলার ক্ষতিটা অনেক বেশি হয়ে গেল। আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়র বিশাল ক্যাম্পাস হারালাম, চট্টগ্রাম একটি সরকারি চারুকলা কলেজ হারাল, এমনকি উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে চারুকলা শিক্ষার প্রক্রিয়াটাই বন্ধ হয়ে গেল। এখন চারুকলায় প্রতিবছর ভর্তি হয় ৬০ জন, দুটো প্রতিষ্ঠান থাকলে যা দ্বিগুণ হতে পারত। চট্টগ্রামের চারুশিক্ষার্থীদের মাঝে দুটি সুস্পষ্ট বিভাজন তৈরি হতো না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল, বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির সান্নিধ্যে নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে, শহরের চেয়ে তুলনামূলক কম ব্যয়ে শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করতে পারত। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে চারুকলার পরিচয়, শিল্পানুরাগী প্রজন্ম তৈরিতে সহায়ক হতো। তৈরি হতো শিল্পের সমঝদার, সমালোচক ও বিশাল ভোক্তা সমাজ। ওই প্রতিষ্ঠান তাই যত দিন চারুকলা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে না ফিরবে, তত দিন চারুকলাহীন বিবর্ণ ক্যাম্পাস আর চারুশিক্ষার্থীরা থাকবেন অধিকার ও সুবিধাবঞ্চিত।
এ গুরুত্ব অনুধাবন করে যাঁরা নিজেদের শিক্ষাজীবন বাজি রেখে আজ আন্দোলন–সংগ্রামে নেমেছেন, অবিলম্বে তাঁদের দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার যেকোনো সুযোগ ও অজুহাত আত্মঘাতী। তাই সার্বিক বিবেচনায় তাঁদের এ যৌক্তিক দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুনরায় ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
আ ছা ই ম সায়েম হোসেন ভিজ্যুয়াল আর্টস্ট এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী